বাজেটের আগে বাজারে দাম চড়া কফি-কাজুবাদামের বাজেটের আগে আরেক দফা দাম বাড়লেও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি করা এসব পণ্যের দাম বছরজুড়েই ওঠা–নামার মধ্যে ছিল।

বাজেটের আগে বাজারে দাম চড়া কফি-কাজুবাদামের বাজেটের আগে আরেক দফা দাম বাড়লেও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি করা এসব পণ্যের দাম বছরজুড়েই ওঠা–নামার মধ্যে ছিল।

বাজেট ঘোষণার আগেই বাজারে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আমদানি করা বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের দাম এরই মধ্যে বেড়ে গেছে। এসব খাদ্যপণ্যের মধ্যে রয়েছে আমদানি করা কফি, কাজুবাদাম, ইশবগুলের ভুসি, বিভিন্ন ধরনের সস, দুধের মতো পণ্য। প্রতিবছরই বাজেটের আগে বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম ওঠা–নামা করে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

যেসব পণ্যের আমদানি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা সেসব পণ্যের দাম আগেভাগেই বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাজেটে দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার জন্য আমদানি পণ্যের শুল্কায়নের নানা পরিবর্তন-পরিমার্জন করা হয়ে থাকে। এ কারণে আগেভাগে বাজারে এর প্রভাব দেখা যায়।

রাজধানীর নিউমার্কেট ও মগবাজারের বিভিন্ন দোকান ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গতকাল কথা বলে জানা গেছে, গত এক মাসের ব্যবধানে আমদানি করা কফির দাম ২০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে আমদানি করা প্রতি কেজি কফি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা। এক মাস আগে এর দাম ছিল ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা। তবে বাজারে হরেক রকমের কফি আছে। তাই মানভেদে দামেরও বড় ধরনের হেরফের রয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারিতে কফির দাম অনেক বেড়ে গেছে।

বাজেট এলে বাজারে সব সময় একটা প্রভাব থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আগে থেকে নিত্যপণ্যের দাম চড়া। এখন নতুন করে বেড়েছে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের দাম
হৃদয় হোসেন, স্বত্বাধিকারী, হৃদয় স্টোর, নিউমার্কেট
এদিকে গত এক মাসে মানভেদে প্রতি কেজি কাজুবাদামের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। বাজারে এখন প্রতি কেজি ভাজা কাজুবাদামের দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে। তিন মাস আগে এই কাজুবাদামের প্রতি কেজির দাম ছিল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা।

কাজুবাদাম-কফির পাশাপাশি আমদানি করা গুঁড়া দুধের দামও বেশ বাড়তি। গত এক মাসে ৩৫০ গ্রাম ওজনের দুধের প্যাকেটের দাম ৫০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৪৫০ টাকা। একই হারে দাম সমন্বয় হয়েছে আড়াই কেজির আমদানি করা দুধের কৌটায়ও। আড়াই কেজির দুধের কৌটার দাম বেড়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে নিডো ব্র্যান্ডের আড়াই কেজির একটি দুধের কৌটার দাম তিন মাসে ২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ২০০ টাকা।

 

মগবাজারের আজমির স্টোরের স্বত্বাধিকারী এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কফির সঙ্গে কফি মেটের দামও বেড়েছে। আর গুঁড়া দুধের দাম আগে থেকেই বাড়তি ছিল। ডলারের দামের অস্থিরতা শুরুর পর থেকে বাজারে আমদানি করা দুধের দাম একেক সময় একেক রকম হয়ে যাচ্ছে।

দেশে ডলারের বাজার এখনো স্থিতিশীল হয়নি। কাটেনি সংকটও। তাতে আগামী বাজেটে কফি-কাজুবাদামের মতো খাদ্যপণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে সরকার আরও কড়াকড়ি আরোপ করতে পারে—এমন আশঙ্কায় বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়তি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রক্রিয়াজাত ও রেডি টু কনজিউম কফি আমদানিতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। কাজুবাদাম আমদানিতেও শুল্কায়ন মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে এখন শুল্ক-কর বেশি দিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমদানি করা প্রতি কেজি ইশবগুলের ভুসি বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। এক মাস আগেও এই দাম ছিল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। এ ছাড়া আমদানি করা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সসের দাম লিটারে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে মানভেদে প্রতি লিটার বিদেশি সস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দামে।

রাজধানীর নিউমার্কেট ডি ব্লকের হৃদয় স্টোরের স্বত্বাধিকারী হৃদয় হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বাজেট এলে বাজারে সব সময় একটা প্রভাব থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আগে থেকে নিত্যপণ্যের দাম চড়া। এখন নতুন করে বেড়েছে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের দাম।

অর্থ বাণিজ্য