বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে গত ৩১ মে আর্জেন্টিনায় অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল প্রতি টন ৮৪৭ মার্কিন ডলার। ঠিক এক বছর আগে এই দর ছিল ১ হাজার ৯৭০ ডলার। ফলে দাম কমেছে প্রায় ৫৭ শতাংশ।
দেশের বাজারে এখন এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের নির্ধারিত দর ১৯৯ টাকা, যা গত ৩ মে লিটারে ১২ টাকা বাড়ানো হয়। মূল্যবৃদ্ধির কারণ সয়াবিন তেলে মূল্য সংযোজন করের (মূসক বা ভ্যাট) ছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া। মূল্যবৃদ্ধির পর দাম যা দাঁড়িয়েছে, তা এক বছর আগের তুলনায় আড়াই শতাংশের মতো কম।
দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম অর্ধেকে নেমে এলেও দেশে তার সুফল নেই। শুধু সয়াবিন তেল নয়, চিত্রটি মোটাদাগে গম, মসুর ডাল, জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একই রকম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্ববাজারে দাম কমলেও তাদের খরচ ততটা কমেনি। কারণ, দেশে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় পরিবহন খরচও বেড়েছে।
এদিকে অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য বিশ্ববাজারকে দায়ী করার যে প্রবণতা দেখা যায়, সেটি এখন আর যৌক্তিক নয়; বরং মূল্যস্ফীতি এখন দেশীয় কারণেই বেশি হচ্ছে। সরকার যেমন ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, তেমনি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়ে মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিয়েছে। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বিশ্ববাজারে কমলেও দেশে কমানো হচ্ছে না। বরং এ খাত থেকে ভর্তুকি পুরোপুরি তুলে নিয়ে মুনাফা করছে সরকার।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, এখন আর বিশ্ববাজারকে দায়ী করে লাভ নেই। দেশে মূল্যস্ফীতির কারণ এখন ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, ডলার–সংকটের কারণে বিদেশ থেকে আমদানি ব্যাহত হওয়া এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়া।বিস্তারিত