রফিকুল ইসলাম
তীব্র তাপদাহের সাথে দেশজুড়ে চলছে বিদ্যুতের অতিরিক্ত লোডশেডিং। ফলে অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়েছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিদ্যুতের এমন সমস্যার সমাধান দ্রুত করতে না পারলে তার প্রভাব পড়বে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ফলে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। তাদের ভাষ্যমতে দ্রুত সময়ের মধ্যেই এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই। এজন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। নইলে সরকার বিগত দিনে যত উন্নয়ন করেছে, সবগুলোই বিফলে চলে যাবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, আমাদের কিন্তু বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। প্রয়োজনের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সক্ষমতাও আছে। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে আজ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা নেই, গ্যাস নেই, ডিজেল নেই। এ সকল কারণেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকার কয়লা, গ্যাস ও তেল আনার চেষ্টা করছে। আশা করি আগামী দুই মাসের মধ্যেই সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আর সমস্যা সমাধান হলেই এর কোনো প্রভাব কিন্তু সংসদ নির্বাচনে পড়বে না। তবে দ্রুত সমাধান করতে না পাড়লে আমাদের কিন্তু সমস্যায় পড়তে হবে।
তথ্যমতে, চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতে দেশে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আসন্ন এ নির্বাচনের আগে দেশে বিদ্যুতের অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের বিষয়টি ভালো ভাবে নিচ্ছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও চলমান বিদ্যুতের লোডশেডিং জনজীবনে যে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে- তা নিয়ে চিন্তিত আওয়ামী লীগও। দেশের অভ্যন্তরে সৃষ্ট এসব সংকট আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন তারা। তাদের ভাষ্যমতে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনার বিকল্প নেই। এজন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। নইলে সরকার বিগত দিনে যত উন্নয়ন করেছে, সবগুলোই বিফলে চলে যাবে। তবে দলটির নেতারা মনে করেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বিদ্যুৎ নিয়ে দেশে যে সব সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তা দ্রুতই সমাধন হয়ে যাবে। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সবধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। ফলে সংসদ নির্বাচনে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি করছে কেউ কেউ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, সত্যিই বিদ্যুৎতের লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। সরকার বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। ফলে ভোগান্তি হচ্ছে। দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে বলে অভিমত ব্যক্ত করে দলটির এই নেতা বলেন, এই সংকট কিন্তু শুধু বাংলাদেশে নয়, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও মহামারী করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এসব সমস্যার সমাধান দরকার। এজন্য কিন্তু সরকারের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। সরকার কিন্তু কাজ করছে। দ্রুতি সময়ের মধ্যেই যদি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়, তাহলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব ফেলবে না। আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, বিএনপির আমলে বিদ্যুতের দুরবস্থা ছিল। এ কারণে কিন্তু মানুষ বিএনপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করেছে। কিন্তু সেই বিদ্যুৎ যদি এখন মানুষ না পায়। বিদ্যুতের কারণে মানুষের যদি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তার ফল কিন্তু ভালো হবে না। সরকারের যত উন্নয়ন সব উন্নয়ন কিন্তু বিফলে চলে যাবে। জাতীয় নির্বাচনে কিন্তু এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যেই সমস্যা সমাধানের বিকল্প নেই। এ জন্য সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
লোডশেডিং পরিস্থিতি ঠিক হতে আরও দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে ধারণা দিয়ে গত রবিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বেশ কিছুদিন যাবৎ লোডশেডিং বেড়ে গেছে। জ্বালানি হিসেবে গ্যাস, কয়লা ও জ্বালানি তেলের জোগান দিতে কষ্ট হচ্ছিল। এ কারণে লোডশেডিং ধীরে ধীরে বেড়ে গেছে। লোডশেডিং পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে গেছে।