লোডশেডিংয়ের মধ্যে ঢাকায় পানিরও সংকট

লোডশেডিংয়ের মধ্যে ঢাকায় পানিরও সংকট

রাজধানীর আফতাবনগরের জি ব্লকে দুই দিন ধরে ঢাকা ওয়াসার লাইনে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বাসিন্দারা দুই দিন ধরে পাশের বনশ্রী থেকে পানি আনতেন। গতকাল মঙ্গলবার বনশ্রীতেও পানির সংকট দেখা দেয়।

আফতাবনগরের জি ব্লকের এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে পানিও যদি না থাকে, তাহলে মানুষ বাঁচে কী করে। এখন তো আরও বেশি পানি লাগে। কিন্তু পানি পাওয়া যাচ্ছে না।

পানিসংকটের এই চিত্র শুধু আফতাবনগরে নয়, রাজধানীর অন্তত ৩৫টি এলাকা থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও ওয়াসার লাইনে চাহিদামতো পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ওয়াসা গাড়ির মাধ্যমে যে পানি বিক্রি করে, তা–ও চাহিদামতো কিনতে পারছেন না কিছু এলাকার মানুষ।

ঢাকা ওয়াসা বলছে, লোডশেডিংয়ের কারণে তারা ঠিকমতো পানির পাম্প চালাতে পারছে না। বিপরীতে প্রচণ্ড গরমের কারণে পানির চাহিদা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়েছে—দুইয়ে মিলে সংকট তৈরি হয়েছে।

পানির সরবরাহ অতি জরুরি একটি সেবা। লোডশেডিং বা অন্য কোনো কারণে এই সেবায় যাতে বিঘ্ন না ঘটে, সেটির প্রস্তুতি থাকা উচিত।

অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা ওয়াসার পরিচালক (কারিগরি) এ কে এম সহিদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে সব পাম্প চালানো যাচ্ছে না। কারণ, সব পাম্প চালানোর মতো জেনারেটর নেই। এতে সংকট তৈরি হয়েছে। বিদ্যুতের সমস্যা কমলে কিংবা দু-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টি হলে পানির সমস্যা কমে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

চাহিদা কত, উৎপাদন কত

ঢাকা ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা শহরে প্রতিদিন ২৫৫ থেকে ২৬০ কোটি লিটার পানির প্রয়োজন হয়। ওয়াসা প্রায় ২৮০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করে। কিন্তু সরবরাহকালে অপচয় (সিস্টেম লস, যা প্রায় ২০ শতাংশ) এবং পাম্প নষ্ট হওয়ার কারণে মাঝেমধ্যেই এলাকাভিত্তিক কিছু সমস্যা তৈরি হয়।

ওয়াসা বলছে, গরমের কারণে এখন পানির চাহিদা বেড়ে দৈনিক ৩০০ কোটি লিটারের কাছাকাছি চলে গেছে। ফলে বেশিসংখ্যক এলাকায় সংকট দেখা দিয়েছে।

ঢাকা ওয়াসার উৎপাদিত পানির প্রায় ৬৭ শতাংশ আসে ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে। বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে গভীর নলকূপ দিয়ে টেনে এই পানি তোলা হয়। সংস্থাটির তথ্য বলছে, এখন ঢাকা ওয়াসার ১ হাজার ৬১টি পাম্প (স্ট্যান্ডবাইসহ) রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলে ওয়াসা নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে পাম্পগুলো চালায়। তবে জেনারেটর দিয়ে সব পাম্প চালানোর মতো সক্ষমতা ওয়াসার নেই। অনেক পাম্প বন্ধ রাখতে হয়।বিস্তারিত

জাতীয়