নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর শ্যামপুর এলাকায় এসএন ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস নামের একটি হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে ৫৩৮ জন হজযাত্রীর টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে শ্যামপুর থানাধীন জুরাইন এলাকায় এজেন্সির সামনে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বিক্ষোভের খবর শুনে ঘটনাস্থলে যায় শ্যামপুর থানার পুলিশ। পুলিশ এজেন্সিটির মালিক শাহ আলমকে খুঁজে পাচ্ছে না।
তার ফোন নম্বরও বন্ধ। তবে অফিসে থাকা তার স্টাফরা জানিয়েছেন, সব কিছুই ঠিক রয়েছে, তারা ভিসার চেষ্টা করছেন। ভিসা হয়ে গেলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। পুলিশ ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে।
তবে একটি সূত্রের দাবি, এজেন্সির মালিক বিদেশে চলে গেছেন।
সূত্র জানায়, ৫৩৮ জন হজযাত্রীর কাছ থেকে টাকা নিলেও মাত্র কয়েকজনের ভিসা লাগিয়েছে ওই এজেন্সি। বুধবার অন্য হজযাত্রীদের ভিসা হওয়ার কথা জানিয়েছিল এজেন্সির পক্ষ থেকে। এদিন সকালে হজযাত্রীরা এজেন্সির জুরাইনের অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তাদের ভিসা হয়নি।
এমনকি কবে নাগাদ হবে সেটিও জানাতে পারেনি। পরে হজযাত্রীদের অনেকে এজেন্সির সামনে বিক্ষোভ করেন। তারা অভিযোগ তোলেন, প্রত্যেকে হজে যাওয়ার জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন। ৫৩৮ জনের কাছ থেকে এজেন্সি ৪২ কোটি টাকার বেশি নিয়েছে। এখন তাদের ভিসাও হচ্ছে না, মালিককেও খুঁজে পাচ্ছেন না।
এ অবস্থায় তারা এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তবে তারা চান হজে যেতে। এ জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
হজযাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মো. আশরাফ হোসেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, আমার স্ত্রী, শাশুড়িসহ চারজন হজে যাওয়ার জন্য এজেন্সিকে ৩১ লাখ টাকার বেশি দিয়েছি। এই টাকা দিয়ে হোটেল ভাড়াসহ যাবতীয় কার্যক্রম করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভিসা হয়নি। জানতে পারলাম হোটেল ভাড়া করেনি। সৌদি আরব থেকে এই এজেন্সিকে কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য বলা হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছি। খবর পেলাম এজেন্সির মালিক বিদেশে চলে গেছেন। এ অবস্থায় আমরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে শ্যামপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শিহাব উদ্দিন সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ভুক্তভোগীরা চাইছেন যেকোনোভাবে যেন তাদের হজে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। আমরা হজ এজেন্সির মালিক শাহ আলমের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তার ফোন নম্বরও বন্ধ। স্টাফরা জানিয়েছেন, সব কিছুই ঠিক আছে। ভিসা হলেই তারা সৌদির উদ্দেশে রওনা হতে পারবেন। এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি প্রতারণার কোনো উদ্দেশ্য থাকে তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসএন ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের অফিসটি জুরাইনের মাজার পশ্চিম গেট সংলগ্ন চিশতিয়া টাওয়ারে। প্রতিষ্ঠানটির আরো একটি শাখা অফিস রয়েছে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে।