রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় একটি বেকারি কারখানায় ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন মো. মাহমুদুল হাসান। সস্ত্রীক ২০২১ সালে ঢাকায় এসে যোগ দেন এ কাজে। গত এপ্রিলে কারখানাটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর নানা জায়গায় চেষ্টা-তদবির করেও নতুন কোনো কাজ পেলেন না মাহমুদুল হাসান।
শেষ পর্যন্ত তাই পরিবার নিয়ে ফিরে গেছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের গ্রামের বাড়িতে।
জানতে চাইলে গতকাল বুধবার মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিচালনা খরচ বেড়ে যাওয়ায় বেকারির মালিক কারখানাটি আর চালাতে পারেননি। এ কারণে সেখানে কাজ করা ১৫ জন কর্মীর অধিকাংশই রাজধানী ছেড়ে গ্রামে ফিরে গেছেন। আমিও ঢাকায় কোনো কাজ খুঁজে না পেয়ে বাধ্য হয়ে গ্রামে ফিরে এসেছি। চেষ্টা করছি গ্রামে নিজে কিছু করার।’
মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে গেলে কিংবা গ্রাম ছেড়ে শহরে এলেই পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে না। সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানো না গেলে তাঁদের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছে, তা আরও বাড়বে।
মাহমুদুল হাসানের মতো নানা পেশা ও আয়ের মানুষের মধ্যে শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপেও এ প্রবণতার চিত্র উঠে এসেছে। স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস নামে এ জরিপ করেছে বিবিএস।
বিবিএসের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, শহর থেকে গ্রামে ফিরে যাওয়া মানুষের সংখ্যা এক বছরের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে শহরে বসবাসকারী প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে ১১ জন গ্রামে ফিরে গেছেন। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল হাজারে ৬ জন।
ঢাকা ছেড়ে গ্রামে ছুটছে মানুষ
গত মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা জরিপের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মানুষের মধ্যে শহর থেকে গ্রামে ফিরে যাওয়ার প্রবণতা হঠাৎ বেড়ে গিয়েছিল ২০২০ সালে। এর আগে এ সংখ্যা ছিল খুবই কম। অন্যদিকে গত বছর গ্রাম ছেড়ে শহরে কিংবা এক শহর ছেড়ে অন্য শহরে স্থানান্তরের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জরিপে দেখা গেছে।বিস্তারিত