আলেশা মার্টের সব সম্পত্তি ফ্রিজের নির্দেশ

আলেশা মার্টের সব সম্পত্তি ফ্রিজের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বহুল আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের সব সম্পত্তি ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।

বুধবার (২১ জুন) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আছাদুজ্জামান এ আদেশ দেন। এর আগে রাজধানীর বনানী থানার মানিলন্ডারিং আইনে করা মামলায় আলেশা মার্টের সব সম্পত্তি অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) ও মঞ্জুরুল আলম শিকদারসহ চারজনের বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ফাইনান্সিয়াল ক্রাইমের পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান। চলতি বছরের মে মাসে বনানী থানায় মানিলন্ডারিং আইনের ৪(২)/৪(৪)/৪(৩) ধারায় মামলা করে পুলিশ। মামলার তদন্তের স্বার্থে আলেশা মার্টের সব সম্পত্তি ফ্রিজ ও মঞ্জুরুল আলম শিকদারসহ চার জনের বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করলে বিচারক আজ তা মঞ্জুর করেন।

তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি জানায়, ২০২০ সালের ২৬ জুলাই আলেশা মার্ট যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর থেকে নিবন্ধন পায়। পরে প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইলেন্স নেয়। আনুষ্ঠানিকভাবে আলেশা মার্টের যাত্রা শুরু ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি।

যাত্রা শুরুর পর কম মূল্যে মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য সরবরাহের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেয় প্রতিষ্ঠানটি। তবে বহু গ্রাহককে পণ্য না দিয়ে কিংবা টাকা ফেরত না দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসার আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে তারা টাকা পাচার (মানি লন্ডারিং) করেছে বলে জানায় সিআইডি।

সিআইডি বলছে, চারটি বেসরকারি ব্যাংকে আলেশা মার্টের চারটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৪২১ কোটি টাকা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়া আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৩১ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ কেনা হয়েছে। ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৫ আগস্টের মধ্যে এই সম্পদ কেনা হয়।

সিআইডি জানায়, মঞ্জুরুল আলমের ২০২০-২০২১ অর্থবছরের আয়কর বিবরণীর তথ্যে দেখা যায়, বেতন ও আনুষঙ্গিক বেতন মিলে মঞ্জুরের আয় ছিল মাত্র ১৩ লাখ ৯০ হাজার। অথচ সাত মাসের ব্যবধানে তিনি ৩১ কোটি টাকার সম্পদ কেনেন।

সিআইডি সূত্র জানায়, কম মূল্যে মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রনিক পণ্য বিক্রির নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ আলেশা মার্টের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আলেশা হোল্ডিংস লিমিটেড, আলেশা টেক লিমিটেড, আলেশা এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট লিমিটেড, আলেশা কার্ড লিমিটেড, আলেশা রাইড লিমিটেড, আলেশা ফার্মেসি লিমিটেড, আলেশা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড, আলেশা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড ও আলেশা অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সিআইডি সূত্র আরও জানায়, গ্রাহকের টাকায় আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় প্রায় দুই হাজার শতক জমি কিনেছেন, যার আনুমানিক মূল্য দেখানো হয়েছে ২১ কোটি টাকা।

Others