প্রত্যাহার হচ্ছে রিটার্ন জমার ২০০০ টাকার কর

প্রত্যাহার হচ্ছে রিটার্ন জমার ২০০০ টাকার কর

ব্যাপক সমালোচনার পর প্রত্যাহার করা হচ্ছে ন্যূনতম ২ হাজার টাকা কর আহরণের প্রস্তাব। নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৪৪ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন জমার সিøপ বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়। স্লিপ পেতে করযোগ্য আয় না থাকলেও ন্যূনতম ২ হাজার টাকা কর আদায়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু এই প্রস্তাবকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে সমালোচনা শুরু করেন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) এই প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবিতে চিঠি দেয় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। তাদের এই দাবিতে সায় রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

সূত্র জানিয়েছে, স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর চলমান মূল্যস্ফীতির চাপ বিবেচনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ন্যূনতম কর আদায়ের প্রস্তাব বাতিল করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থবিলে এ পরিবর্তন এনে আগামী ২৫ জুন পাস হচ্ছে অর্থবিল। আর পরের দিন ২৬ জুন পাস হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলপয়েন্ট কলমের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। এই প্রস্তাব নিয়েও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ফলে এই সিদ্ধান্ত থেকে আংশিক সরে আসছে এনবিআর। জানা গেছে, কলমের ওপর পাঁচ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হতে পারে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষার মৌলিক উপকরণের ওপর ভ্যাট আরোপ করা যুক্তিসঙ্গত নয়। এতে শিক্ষার্থীদের পরিবারের ওপর চাপ পড়বে।

সূত্র জানায়, মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্নআয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী ন্যূনতম কর আরোপের বিধান বিলোপের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এনবিআর চূড়ান্ত বাজেটে সেই প্রভিশনটি বাতিল করবে। অর্থাৎ সরকারি-বেসরকারি সেবা পেতে কারও রিটার্ন জমার সিøপ প্রয়োজন হলে আগের নিয়মে শূন্য আয় দেখিয়ে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। কেবল করমুক্ত সীমার ওপরে আয় থাকলে সø্যাব অনুযায়ী আয়কর দিতে হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা এবং নারীদের ৪ লাখ টাকা করা হয়েছে। বার্ষিক আয় কম থাকলে শূন্য আয় দেখিয়ে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে, এক্ষেত্রে কর দিতে হবে না। যদি বার্ষিক আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করে তা হলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতাদের ন্যূনতম কর পাঁচ হাজার টাকা, অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকার করদাতাদের চার হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশন ছাড়া অন্যান্য এলাকার করদাতাদের তিন হাজার টাকা দিতে হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ৪৪টি সরকারি-বেসরকারি সেবা পেতে রিটার্ন জমার স্লিপ বাধ্যতামূলক রাখা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখজনক হচ্ছে- ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ লাখ টাকা বেশি ঋণ নিলে; কোম্পানি পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হলে; আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন সনদ (আইআরসি-ইআরসি) নিতে; সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে; সমবায় সমিতি নিবন্ধন নিতে; বীমা কোম্পানির সার্ভেয়ার হতে; ১০ লাখ টাকা বেশি মূল্যের জমি-ফ্ল্যাটের দলিল করতে; ক্রেডিট কার্ড নিতে; পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ নিতে; ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র পেতে; গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে; ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে বাচ্চা ভর্তি করতে

অর্থ বাণিজ্য