গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইব্রাহিম খলিলের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে প্রায় আট কোটি ৭১ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিনি প্রায় দেড় কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলেও প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি। তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। এসব সম্পদ তারা অর্জন করেছেন ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে। দুদকের উপপরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার এ অনুসন্ধান করেছেন। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক লেনদেনের ঘটনায় ইব্রাহিম খলিল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার কমিশন থেকে এই দুই মামলা দায়েরের অনুমোদন দেওয়া হয়। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক আমাদের সময়কে বলেন, যে কোনো সময় দুদকের গাজীপুর সমন্বিত জেলায় কার্যালয় এসব মামলা করবে।
দুদক জানায়, অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান গাজীপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মোজাহের আলী সরদার।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, ইব্রাহিম খলিলের সম্পদ বিবরণী পর্যালোচনা ও অন্যান্য নথিপত্র যাচাই করে দেখা যায়, তিনি অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৪৯ হাজার ৩৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ২৫ লাখ ৯৩ হাজার ৯১৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন। অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা ভোগদখলে রাখায় তারা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
দুদক থেকে জানা যায়, প্রকৌশলী ইব্রাহিম খলিল গাজীপুর পৌরসভায় ১৯৯৩ সালে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দেন। গাজীপুর পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে রূপান্তর করার পর ২০১৩ সাল থেকে তিনি বিদ্যুৎ বিভাগে কর্মরত। চাকরির সময়ে তার ব্যাংক হিসাবে বেতন-ভাতার টাকা জমা হওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত ৮ কোটি ৭১ লাখ ৪১ হাজার ৮১ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এসব টাকা কোথা থেকে এসেছে এবং তা পরে কোথায় স্থানান্তর হয়েছেÑ তা আরও অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে ইব্রাহিম খলিল আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। আমার যা সম্পদ, তা আয়কর রিটার্নে বলা আছে। এর বাইরে কিছু নেই।’