গত ২২ ও ২৩শে জুন ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো এইচ এন্ড এইচ ফাউন্ডেশন আয়োজিত ঢাকার রাওয়া ক্লাবে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান| দুইদিন ব্যাপী এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে, প্রায় ১৫০০ বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যক্তিবর্গ বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, চক্ষু পরীক্ষা, ডায়াবেটিক টেস্ট সহ অন্যান্য পরীক্ষা সাশ্রয় মূল্যে প্রদান করা হয়েছে মেডিকেল পার্টনার হিসাবে সহযোগিতা করে খিদমা হাসপাতাল ও প্রভা হেলথ। এতে এইচ এন্ড এইচ ফাউন্ডেশন হেলথ কার্ড ব্যবস্থা করা হয়। এতে প্রায় ৮টি দেশি ও ৩টি বিদেশী হাসপাতাল, ল্যাব সহ ইত্যাদি চিকিৎসা সেবায় মূল্যছাড় পাওয়া যাবে|
মেডিএক্সপোর সমাপনী দিনে মা ও শিশু বিষয়ক ডাক্তারি পরামর্শ ও স্বাস্থ্যবিষয় নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এইচ এন্ড এইচ ফাউন্ডেশনের সভাপতি এম۔ সাফাক হোসেনের পরিচালনায়, ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ ডিরেক্টর সুমাইয়া জামানের সঞ্চালনায় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ডা۔এনামুর রহমান এমপি, গেস্ট অফ অনার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ান হাই কমিশনার হার এক্সসেলেন্সি হাজনা মো: হাসিম, নেপাল এম্বাসির দ্বিতীয় সচিব জনাব রঞ্জাব ইয়াদাভ।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রেখেছেন বাংলাদেশের জৈষ্ঠ্য ডাক্তারবৃন্দ যারা বক্তব্য দিয়েছেন প্যানেলিস্ট সদস্য হিসেবে তারা হলেন
* প্যানেল চেয়ার – লেঃ কর্নেল ডা রেহানা খানম (অবঃ), শিশু বিশেষজ্ঞ।
* প্রফেসর মেজর (অবঃ) ডা লায়লা আরজুমান্দ বানু, চিফ কনসালটেন্ট স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি, ল্যাবএইড হাসপাতাল।
* প্রফেসর ডা মোঃ আব্দুল মান্নান, নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ, প্রাক্তন۔۔ চেয়ারম্যান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি।
* ডা: কানিজ ফাতেমা, চাইল্ড নিউরোলজি ও অটিজম স্পেশালিস্ট, চেয়ারম্যান ও অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পেডিয়াট্রিক বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি।
* ডা মোমেনা বেগম, পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজিস্ট ও অনকোলজিস্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, বিএসএমএমইউ।
* প্রফেসর ডা অনুপম হোসেন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
* ডা কানিজ ফাতেমা, শিশু স্নায়ু ও অটিজম বিশেষজ্ঞ।
* ডা তাহমিনা করিম, ফেলো পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি।
* লেঃ কর্নেল (অবঃ) বেগম নাজনীন, স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ।
আলোচনা সভায় মূলত মা, শিশু ও পুষ্টি নিয়ে বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য সেবা ও সচেতনতা, রোগব্যধি ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের দিক গুলি তুলে ধরা হয়| বর্তমান আধুনিক যুগে বাংলাদেশ কিভাবে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুহার পূর্বের চেয়ে কমিয়ে আনা হয়েছে এ বিষয়ে বাংলাদেশ পেরিন্টাল সোসাইটির ডাক্তার সদস্যদের অবদানের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। বিদেশের মত উন্নত চিকিৎসা সেবায় ডাক্তারদের কেমন অবদান থাকতে পারে এসকল বিষয় নিয়েও সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন|
আলোচনায় স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি, শিশু স্বাস্থ্য, শিশু কার্ডিওলজি, অটিজম ও নিউরোলজি, হেমাটোলজি, পুষ্টি ও জনস্বাস্থ্য বিষয় নিয়ে আলোকপাত হয়।
আলোচনার শেষে মালয়েশিয়ান হাই কমিশনার হার এক্সসেলেন্সি হাজনা এমডি হাসিম জানান, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া চিকিৎসা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবসময় পাশেই ছিল, নিজস্ব রিসোর্স দিয়ে চিকিৎসা সেবা, ভ্যাকসিন, রোগব্যধি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপায় দুপাক্ষিক মেডিকেল একচেঞ্জের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যাবে। ইতিমিধ্যে মালয়েশিয়া হেপাটাইটিস সি মহামারীকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে| এই বিষয়ে বাংলাদেশকেও সহায়তা করবে।
নেপাল দূতাবাসের দ্বিতীয় সেক্রেটারি মি: রঞ্জাব ইয়াদাভ বলেন, “চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে, নেপাল থেকে অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ এ মেডিকেল পড়তে আসে, বাংলাদেশে অনেক রিসোর্সফুল ডাক্তার আছেন যারা মেডিকেল এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন। আমরা এরকম ডাক্তারদের সহায়তায় নিজেদের দেশের চিকিৎসা আরো আধুনিকায়ন করার সুযোগ পাবো।
সর্বশেষ মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ডা এনামুর রহমান তার বক্তব্যে বাংলাদেশের চিকিৎসার উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন, পূর্বের চেয়ে বর্তমানে আধুনিকায়নের কথাও বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও ইমার্জেন্সি মেডিকেল ক্যাম্প, মেডিকেল সহায়তায় কি কি ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয় সেটিও তুলে ধরেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ পেরিনেটাল সোসাইটির সদস্য ডাক্তারদের চিকিৎসা খাতে তাদের অবদানকে প্রশংসা করেছেন এবং তার মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকেও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
এই আয়োজনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করছে যেমন মেডিকেল, ফার্মাসিউটিকাল, মেডিকেল ট্যুরিজম, ইরান আইভিএফ এবং দেশি বিদেশী হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টার|
এইচ এন্ড এইচ ফাউন্ডেশন একটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। সামাজিক উন্নয়ন, চিকিৎসা , শিক্ষা, জলবায়ু এই সকল বিষয়ে গবেষণামূলক ও বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম করে আসছে।