ঢাকা ফিরছেন কর্মজীবীরা

ঢাকা ফিরছেন কর্মজীবীরা

ঈদুল আজহার পাঁচ দিনের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী কর্মজীবীরা। গতকাল ছিল কর্মদিবসের প্রথম দিন। এবার এক দিন বেশি ছুটিতে ছিলেন কর্মজীবীরা। ফিরতি পথে প্রতিবারের মতো এবার নেই সড়ক, নৌ ও ট্রেনপথে বিশৃঙ্খলা। একই সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার হিড়িক থাকলেও নেই রাজধানী ফেরার তাড়া। এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলায় অর্ধেকের বেশি ঢাকার বাইরে। বাসযাত্রায় অধিক ভাড়া নেয়ার অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। ভোক্তা অধিকারে জানিয়েও প্রতিকার পাননি যাত্রীরা। জানা যায়, সরকারি-বেসরকারি অফিস ছুটি ছিল ২৭ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত। এই সময়ে ঢাকার বাইরে গেছেন ৯৯ লাখ ৪৭ হাজার ৭২৬ জন এবং ফিরেছেন ৩২ লাখ ৮২ হাজার ১৫২ মানুষ। অর্থাৎ এখনো অর্ধেকের বেশি ঢাকায় আসেননি।

রাজধানীর সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাসটার্মিনাল পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছেন সাধারণ মানুষ। যাত্রীরা জানিয়েছে, এবারের যাত্রায় রাস্তায় তেমন যানজট ছিল না। অগ্রিম টিকিট না কাটলেও বাস পেতে সমস্যায় পড়তে হয়নি যাত্রীদের। তবে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিয়েছে কিছু কিছু বাসমালিক। এ নিয়ে কেউ কেউ ভোক্তা অধিকারে অভিযোগও জানিয়েছেন। কিন্তু ভোক্তা অধিকারের দীর্ঘসূত্রতায় প্রতিকার পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা খলিলুর রহমান ঈদের ছুটি শেষে নোয়াখালী থেকে ফিরেছেন।

সায়েদাবাদে হিমালয় এক্সপ্রেস বাস থেকে নেমে  বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও আমাদের থেকে ২০০ টাকা বেশি নেয়া হয়েছে। যাওয়ার পথেও ২০০ টাকা বাড়তি নেয়া হয়েছে। এই রুটের আল বারাকা এক্সপ্রেসও একই রকম বেশি ভাড়া নেয়। এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকারে ফোন দিয়েছি। ওনারা নির্দিষ্ট প্রমাণসহ কারওয়ান বাজারে অভিযোগ জানাতে বলেন। অভিযোগ জানিয়ে আমার কী লাভ? আমি তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি তো আর টাকা ফেরত পাবো না। অভিযোগ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে ওনারা এলে আমরা প্রতিকার পেতাম।

রাজধানীর গাবতলি বাসটার্মিনালে ঢাকা আসা মানুষের ভিড় দেখা যায়নি। সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাতুল খন্দকার ঈদ শেষে পরিবারসহ ঢাকায় ফিরেছেন। তিনি বলেন, যাওয়ার পথে ভোগান্তিতে পড়েছি। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়েছি ১৪ ঘণ্টায়। কিন্তু ফিরতি পথে এ ধরনের কোনো যানজটে পড়তে হয়নি। বাস পেতেও অপেক্ষা করতে হয়নি। রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চটার্মিনালেও যাত্রীদের তেমন ভিড় দেখা যায়নি। স্বাভাবিক দিনের মতোই ঢাকায় ফিরছেন সাধারণ মানুষ। যাত্রীদের ভিড় না থাকলেও লঞ্চগুলো পূর্ণ হয়েই ফিরছে রাজধানীতে। বাসের তুলনায় লঞ্চে ভাড়াও কম।

তবে যাত্রীরা জানিয়েছেন, লঞ্চযাত্রায় বাসের তুলনায় সময় বেশি লাগছে। এরপরও লঞ্চযাত্রায় আনন্দের কথা বলছেন তারা। রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনেও স্বস্তির যাত্রায় সাধারণ মানুষ। এবারও শতভাগ অনলাইনে টিকিট চালু রেখেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে দু-চার জন অবৈধ পথে স্টেশনে ঢুকতে পারলেও ট্রেনে ভিড় নেই। স্বাভাবিকভাবে রাজধানী ফিরছেন কর্মজীবীরা। ট্রেনযাত্রায় স্বস্তির কথা জানিয়ে মাহবুবুল হক বলেন, এভাবে প্রতিবার অনলাইনে টিকিট রাখা প্রয়োজন। তাহলে ট্রেনে উঠা ও সিট বের করার ভোগান্তি থেকে মানুষ মুক্তি পাবে।

জাতীয়