আইএমএফ বিশ্বব্যাংকের যৌথ মিশন আসছে

আইএমএফ বিশ্বব্যাংকের যৌথ মিশন আসছে

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের একটি যৌথ প্রতিনিধি ঢাকায় আসছে আজ। দেশের আর্থিক খাতের সংস্কার ও গতিপ্রকৃতি এবং আইএমএফের দেওয়া সংস্কার কর্মসূচিগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবেন তাঁরা। একই সঙ্গে চলমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন (৪৭০ কোটি) ডলার ঋণ চুক্তির দ্বিতীয় কিস্তির বিষয়েও আলোচনা করবেন। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, এটি সংস্থাটির নিয়মিত ভিজিট। এরা মূলত কারিগরি বিষয়গুলোর মূল্যায়ন, পর্যালোচনা, অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে। এরপর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আসবে আরেকটি (কারিগরি) প্রতিনিধি দল। তারা ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিয়ে আলোচনা করবেন। আজ ৫ থেকে ১৭ জুলাই সফরের এ সময় তাঁরা অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করবেন। অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিনিধি দলটির সফর ও আলোচন্য সূচি ঘেঁটে জানা গেছে, এ সময় দেশের বন্ড মার্কেট শক্তিশালীকরণ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন বাংলাদেশ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। তাঁদের আলোচন্য সূচিতে আরও রয়েছে সিকিউরিটিজ মার্কেটে সরকারি লিকুইডিটি বৃদ্ধি। লিকুইডিটি ব্যবস্থাপনা। মুদ্রানীতির বাস্তবায়ন ও সঠিক ব্যবস্থাপনা। সুদের হারের ক্যাপ তুলে দেওয়ার প্রভাব। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক্সচেঞ্জ রেট স্টেটমেন্ট অ্যাকাউন্টস। রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কৌশল ও বাস্তবায়ন। ব্যালান্স অব পেমেন্ট সিস্টেম পরিস্থিতি। আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা। সামাজিক নিরাপত্তা ও সঞ্চয় পরিস্থিতি। তারল্য ব্যবস্থপনা। কলমানি মার্কেট।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিও দ্রুত গতিবিধি বদলাচ্ছে। ফলত ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। বাজারে দ্রব্যমূল্যের চলছে ঊর্ধ্বগতি। জুন শেষে মূল্যস্ফীতি আগের মাসের তুলনায় সামান্য কমে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নের হারও সন্তোষজনক নয়। বেড়েছে খেলাপি ঋণ। আর্থিক খাতের সংস্কার কার্যক্রমেও নেই কাক্সিক্ষত গতি। আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির ফলে রিজার্ভ কমছে দ্রতগতিতে। সামষ্টিক অর্থনীতি বাগে আনতে বিদেশ ভ্রমণ, প্রকল্পের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনাসহ নানা খাতে কৃচ্ছ্রসাধন চলছে। সরকারের ব্যালান্স অব পেমেন্টেও নেতিবাচক ধারা। তবে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। সামষ্টিক অর্থনীতির প্রধান প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে শুধু এ দুটি সূচকই ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সামষ্টিক অর্থনীতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসছে এ যৌথ প্রতিনিধি দল। আইএমএফের সঙ্গে চলমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তির আওতায় প্রথম কিস্তি গত ফেব্রুয়ারিতেই ছাড় করা হয়েছে। প্রথম কিস্তি ছাড়ের পর সংস্থাটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নজরদারিও বাড়িয়েছে। আর্থিক খাতের সংস্কার কর্মসূচিগুলো ঠিকঠাক এগোচ্ছে কি না, বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকছে কি না এসব বিষয়ে তীক্ষè দৃষ্টি রাখছে আইএমএফ।

অর্থ বাণিজ্য জাতীয়