নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগে যারা মনে করত আমরা শুধু হাত পেতে চলব, এখন আর সেটা মনে করে না। আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে অর্থ ধার নিই, হাত পাতি না। তার সুদসহ ফেরত দিই। আগে ভাবনাটা এমন ছিল যে আমরা ভিক্ষা নিচ্ছি। এই যে শর্ত দেওয়া। তবে পদ্মা সেতুর এই সিদ্ধান্তের পর এখন আর অত বেশি শর্ত দিতে কেউ সাহস পায় না বা দেয় না।
আজ (বুধবার) দুপুরে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের একটা বদনাম দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি সেটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। আজ আমরা সেটা করতে সক্ষম হয়েছি।
কিছুদিন আগে কাঁচা মরিচের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। এর আগে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। ফলে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এজন্য প্রতিটি খাদ্যপণ্য সরকার সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাতে কারও কাছে হাত পাততে না হয়।
প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতির জনকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সরকার সব ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছে। এজন্য মিলিটারি একাডেমিসহ সব প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, শেরে বাংলানগরে আগে যেখানে বাণিজ্য মেলা হতো সেই স্থানটি পিজিআরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালের ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার হয়েছে। আমরা দারিদ্র্যের হার ৪১.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮.৭ শতাংশ এবং অতিদারিদ্র্যের হার ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের দিকে ধাবিত হচ্ছি। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের নিজেদের অর্থে বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। ফলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সক্ষমতা ও মর্যাদা বহুলাংশে বেড়েছে।
একদিনে ১০০ সেতু এবং একদিনে ১০০ সড়ক উদ্বোধনকে বিশ্বে বিরল উদাহরণ আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের সব ভূমিহীন-গৃহহীনকে বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছি। আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি।
সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই যেই দেশে আমাদের দেশের শান্তিরক্ষীরা কাজ করেছে, সেই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান যখন আমাদের বাহিনীর প্রশংসা করে তখন সত্যিই আমার গর্বে বুক ভরে যায়। এই যে আমরা সম্মান পাচ্ছি, সেটিকে ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।