আরসেপে যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ

আরসেপে যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ

বাণিজ্যিক জোট রিজিওনাল কম্প্র্রেহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপে (আরসেপ) যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্ত মন্ত্রিপরিষদ সভায় উপস্থাপন করা হবে। সেখানে অনুমোদন পেলে আরসেপে যোগদানের প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব পাঠাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

 

২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ দেশ নিয়ে আরসেপ কার্যকর হয়েছে। বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ চীন এই জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে। নিয়মানুযায়ী, ১৮ মাস পর অর্থাৎ ১ জুলাই থেকে আরসেপে অন্তর্ভুক্তির জন্য অন্য দেশগুলোও আবেদন করতে পারবে। ইতোমধ্যে জোটে ভিড়তে আরও দুটি (শ্রীলংকা ও হংকং) দেশের আবেদন বিবেচনাধীন। এখন সেখানে বাংলদেশও অন্তর্ভুক্ত হতে চায়। এ লক্ষ্যে শিগগিরই আবেদন করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আরসেপকে চীনের নেতৃত্বাধীন বাণিজ্যিক ব্লক বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়াও এই ব্লকের সদস্য। তাছাড়া ভারতেরও যে কোনো সময় এই জোটে ফাউন্ডার মেম্বার হিসাবে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের আর বসে থাকার সুযোগ নেই। অন্যদিকে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এ সংক্রান্ত ফিজিবিলিটি স্ট্যাডিতে উঠে এসেছে। এই জোটে যোগ দিলে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সব বিবেচনাতেই আরসেপে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী ও সমপর্যায়ের দেশ ভিয়েতনাম কোন ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরসেপে যোগদান করেছে, সেগুলো ওই বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়। এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পদোন্নতি পেতে যাচ্ছে। এই পদোন্নতির কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) এবং ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (এফটিএ) করার জোরালো প্রক্রিয়া রয়েছে। এর মধ্যে চীন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া-এই ৬টি দেশও রয়েছে, যারা ইতোমধ্যে আরসেপ ফাউন্ডার মেম্বার হিসাবে রয়েছে। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের লাভক্ষতি বিবেচনায় লাভের পাল্লা বেশি হওয়ায় এই জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ অনুবিভাগ) নূর মো. মাহবুবুল হক বলেন, বৈঠকে কিছু পূর্ব সতর্কতাসহ আরসেপে বাংলাদেশের যোগদানের পক্ষে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কতদিনের মধ্যে আবেদন পাঠানো হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আরসেপ মেমোরেন্ডামে নতুন সদস্যদের এক্সেশন প্রসেস সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। অর্থাৎ জোটে অন্তর্ভুক্তির জন্য বাংলাদেশকে শুধু একটি আবেদন করলেই হবে, নাকি কোন প্রেসক্রাইপড মডেল অনুসরণ করতে হবে-সে সম্পর্কে এখন খোঁজখবর নিতে হবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ