এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের তারিখ জানালেন সেতুমন্ত্রী

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের তারিখ জানালেন সেতুমন্ত্রী

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান তিনি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের দিন বিকেলে পুরাতন বাণিজ্যমেলা মাঠে সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। তিনি আরও বলেন, অক্টোবর মাসের ২৮ তারিখে চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আবার একই মাসের মাঝামাঝিতে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল অংশের উদ্বোধন করবেন তিনি। এ ছাড়া ১০০ সেতুর মতো ১৫০টি সেতুর উদ্বোধন আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে হবে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পরের দিন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। আর যান চলাচলে আপাতত সর্বোচ্চ গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। এতে রাজধানীর কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট।

মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো দুই ও তিন চাকার কোনো যানবাহন এই উড়ালসড়কে চলতে পারবে না বলে জানান মন্ত্রী।

বর্তমানে প্রকল্পের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ যান চলাচলে জন্য প্রস্তুত হয়েছে। এ অংশের মেইন লাইনের দৈর্ঘ্য ১১.৫ কিমি এবং র‍্যাম্পের দৈর্ঘ্য ১১.০ কিমি। র‍্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ২২.৫ কিমি। এ অংশে ওঠানামার জন্য মোট ১৫টি র‍্যাম্প (এয়ারপোর্ট-২, কুড়িল-৩, বনানী-৪, মহাখালী-৩, বিজয় সরণি-২ ও ফার্মগেট-১) রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি র‍্যাম্প যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকা পর্যন্ত যাবে। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরের যানজট অনেকাংশে কমে যাবে এবং ভ্রমণের সময় ও খরচ কমবে। মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ১৯.৭৩ কিলোমিটার। প্রকল্পে ওঠানামার জন্য মোট ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র‍্যাম্প রয়েছে। র‍্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬.৭৩ কিলোমিটার।

ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারে দিতে হবে টোল

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প থেকে বিনিয়োগকারীরা তাদের অর্থ তুলবে যানবাহন থেকে টোল আদায়ের মাধ্যমে। এ জন্য তারা আলাদা টোল প্লাজা স্থাপন করা হচ্ছে। এই এক্সপ্রেসওয়ের জন্য সর্বনিম্ন টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। প্রাইভেটকার, জিপ, মাইক্রোবাস, ট্যাক্সির মতো হালকা শ্রেণির যানবাহনের জন্য টোলের এ হার ধার্য করা হয়েছে। অন্যদিকে সর্বোচ্চ ৬২৫ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে বড় ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) জন্য।

১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলের জন্য যানবাহনের চারটি শ্রেণি নির্ধারণ করা হয়েছে, যার প্রথমটি হালকা যানবাহন। এ শ্রেণির যানবাহনের জন্য সর্বনিম্ন টোল ১০০ টাকা। এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার পর শেষ পর্যন্ত না গেলে হালকা শ্রেণির যানবাহন থেকে এ পরিমাণ টোল আদায় করা হবে।

অন্যদিকে, এক্সপ্রেসওয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যবহার করা হালকা যান থেকে টোল আদায় করা হবে ১২৫ টাকা। হালকা শ্রেণির যানবাহনকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায়ের ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়েছে। এ ভিত্তি টোলের দ্বিগুণ আদায় করা হবে বাস থেকে। এ হিসাবে এক্সপ্রেসওয়ের কিছু অংশ ব্যবহারের জন্য বাসের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০ টাকা। আর পুরো এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে চাইলে গুনতে হবে ২৫০ টাকা।

একইভাবে ভিত্তি টোলের চারগুণ নির্ধারণ করা হয়েছে মাঝারি (ছয় চাকা পর্যন্ত) আকারের ট্রাকের জন্য। এ হিসাবে এক্সপ্রেসওয়ের কিছু অংশ ব্যবহার করলে ৪০০ টাকা এবং পুরো অংশ ব্যবহার করলে মাঝারি ট্রাক থেকে টোল আদায় করা হবে ৫০০ টাকা।

আর বড় ট্রাকের জন্য (ছয় চাকার বেশি) টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ভিত্তি টোলের পাঁচগুণ। সেই হিসাবে কিছু অংশ ব্যবহারের জন্য ৫০০ টাকা; পুরো এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের জন্য ৬২৫ টাকা টোল আদায় করা হবে বড় ট্রাক থেকে। বিনিয়োগকারীরা এ অবকাঠামো থেকে সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ