কাঁচপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ

কাঁচপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ

 

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

 

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে বিএনপির পদযাত্রায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, পুলিশের লাঠিচার্জ, গাড়ি ভাঙচুর, ইটপাটকেল ও টিয়ারসেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। শনিবার বিকেলে কাঁচপুর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ১৭ জন গুলিবিদ্ধসহ ৪০ জন আহত হয়। কয়েক দফা ওই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার কারণে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় আধাঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে অতিরিক্ত পুলিশ টিয়ার সেল ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আধ ঘণ্টা ব্যাপী এ সংঘর্ষের পর পরই কাঁচপুর এলাকায় থম থমে অবস্থা বিরাজ করে। তবে পুলিশ কোন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করতে পারে নি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে পদযাত্রা কর্মসূচিতে শনিবার বিকেলে সোনারগাঁওয়ে কাঁচপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, সোনারগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপুর নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঠিসোঠা নিয়ে অবস্থান নেয়। এসময় নেতাকর্মীরা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল করে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে নেতাকর্মীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কের এক পর্যায়ে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করলে নেতাকর্মীরা রাস্তা থেকে সরে যায়। পরে বিএনপি নেতাকর্মীরা আবারো লাঠিসোটা নিয়ে জড়ো হয়ে পুলিশের উপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ।

এসময় নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। প্রায় আধ ঘণ্টার এই ধাওয়া পাল্টার সময়ে পুলিশ টিয়ার সেল ও ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে চলে যায়। পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেটে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজিব, সোনারগাঁ থানা যুবদল নেতা আল আমিন মোল্লা, মোখলেছুর রহমান, জাসাসের সভাপতি আমির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মিয়া, বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন ,শাহনুর, রিয়াজুল ইসলাম, মো, রিপন, আলী নূর, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রাতুল হাসান, ছাত্রদল নেতা আরিফুল ইসলাম রাজ, তারাবো ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মন্টু সিকদার, আড়াইহাজার থানার যুবদল নেতা মনির হোসেন, জুয়েল মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়াও আহত হন ছাত্রদল নেতা রায়হান রিদয়, আক্তার হোসেন, আকাশ মাহমুদ, রিফাত আহমেদ বাবু, রনি, সাইদুল ইসলাম, তৈয়ব আলম, আলমগীর হোসেন, মনোয়ার হোসেনসহ ২৩ জন নেতাকর্মী।

এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের নৈরাজ্য ঠেকাতে সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দারের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা লাঠিসোঠা নিয়ে শনিবার বিকেলে কাঁচপুর বিক্ষোভ করে। এসময় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন জানান, আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার অবস্থান নিলে পুলিশ এসে অতর্কিত লাঠিচার্জ করেছে। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের উপর টিয়ার সেল ও গুলি ছুড়েছে। এতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাই মারমা বলেন, অনুমতি ছাড়াই মহাসড়কের কাঁচপুরে জেলা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি করতে চেয়েছিল। আমরা তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরে যেতে বললে তারা আমাদের উদ্দেশ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষার্থে আমরা ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেই। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। পরবর্তী বিশৃঙ্খলা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ সারাদেশ