নির্বাচনের বছরে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে বেড়েছে তদবিরের চাপ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক তদবিরের চাপে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছেন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রতিদিনই প্রচুর দর্শনার্থী নানা আবদার নিয়ে হাজির হন মন্ত্রী-সচিবসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে। মন্ত্রী-এমপির আধা সরকারি পত্র (ডিও) নিয়েও কেউ কেউ আসছেন। অনেক দফতরে এমপি, মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যানদের দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়। সরকারি চাকরিজীবীরা নিজেদের পদোন্নতি-বদলি নিয়েও করছেন দৌড়ঝাঁপ। সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী বছর হওয়ায় আগের চেয়ে তদবির বেড়েছে। গত কয়েকদিন সচিবালয়ে ঘুরে এবং খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সপ্তাহে এক দিন (সোমবার) দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে এদিনও সচিবালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন দর্শনার্থীরা। ডিজিটাল পাসের বাইরেও অনেকে প্রতিদিন নানাভাবে বিভিন্নজনকে ‘ম্যানেজ’ করে সচিবালয়ে প্রবেশ করছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রীতিমতো বিরক্ত ও বিব্রত। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মানুষের জন্য রাজনীতি করি এ কারণে অনেকেই আসে। মানুষের প্রত্যাশা সব সময় থাকে, ন্যায়সংগত নয় সেগুলো তো আর হয় না। লোকজন আসে আমরা শুনি, নিয়ম-কানুন বুঝিয়ে বলে দিই। কেউ চাকরি চাইলেই তো আমরা দিতে পারি না, ন্যায়সংগত কিছু হলে দেখি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এমনিতেই প্রচুর চাপ থাকে। এবার নির্বাচনী বছর। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসে। আমার পাঁচটি প্রবেশ কার্ড দেওয়ার এখতিয়ার থাকলেও মন্ত্রী বা উপমন্ত্রীর জন্য উনাদের পিএসরা এসে অনেক সময় নিয়ে যান। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ নিয়ে নানা তদবিরে ডেস্কে কাজ করা মুশকিল। সচিবালয়ে নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন ১৫০০-এর মতো দর্শনার্থী পাস নিয়ে প্রবেশ করেন। এর বাইরেও কোনো অনুরোধ থাকলে নানা কারণে প্রবেশ অনুমতি দেওয়া হয়। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব (সচিবালয় নিরাপত্তা শাখা) মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, পাস দেওয়ার সংখ্যা কমেছে। তবে কেমন কমেছে সেটি বলতে চাননি তিনি। ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণবিধিমালা অনুযায়ী- কোনো সরকারি কর্মচারী তার চাকরিসংক্রান্ত কোনো বিষয়ে প্রভাব খাটাতে পারেন না। তবুও অনেক সরকারি কর্মকর্তা তদবির করছেন।বিস্তারিত