আভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের এমন সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বজুড়ে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। বাংলাদেশের মত যেসব দেশ পেঁয়াজের জন্য ভারতের ওপর সরাসরি নির্ভর করে, তাদের ওপর এর প্রভাব পড়বে সবথেকে বেশি। এ খবর দিয়েছে সিএনবিসি।
খবরে জানানো হয়, গত শনিবার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর এই বিশাল শুল্ক আরোপ করে ভারত। মূল্যস্ফীতি কমাতে এবং আভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধিতে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভারতীয় অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছরের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ঘোষণা কার্যকর থাকবে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ভারতে পেঁয়াজের দাম ২০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯শে আগস্ট পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ রুপিতে। যা গত বছরের একই সময় ছিল ২০ রুপি। এমন প্রেক্ষাপটে পেঁয়াজ রপ্তানি হ্রাস করে আভ্যন্তরীণ বাজারে জোগান দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
গবেষণা সংস্থা ক্রিসিলের গবেষণা পরিচালক পুষান শর্মা বলেন, এ বছরের জুলাই মাসে অতি বৃষ্টির কারণে মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে পেঁয়াজের চাষ ব্যাহত হয়েছে।
পুরো জুলাই মাস ধরেই ভারতের বিভিন্ন অংশে অতি বৃষ্টি দেখা গেছে। এতে করে পেঁয়াজের উৎপাদন আশঙ্কাজনক মাত্রায় কমে গেছে। এমন অবস্থার মধ্যে জুলাই মাসে ভারতের মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৭.৪৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। মূলত খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এত উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা যাচ্ছে। গত এপ্রিল মাসে হঠাৎ করে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম পড়ে গিয়েছিল। তবে দ্রুতই তা আবার বেড়ে গেলো। এর আগে জুলাই মাসে ভারত সরকার বাসমতী ছাড়া সব চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করে।
ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিতে কর আরোপের এই ঘোষণার কারণে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা এবং মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ। কারণ এসব দেশই ভারত থেকে সবথেকে বেশি পেঁয়াজ আমদানি করে। ভারত বিশ্বের সবথেকে বড় পেঁয়াজ রপ্তানিকারক দেশ। পেঁয়াজের বৈশ্বিক বাণিজ্যের ১২ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করে ভারত। ফলে ভারতের এমন সিদ্ধান্তের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারেও বাড়তে চলেছে পেঁয়াজের দাম। তবে আগামী অক্টোবরেই পেঁয়াজের দাম কমে যেতে পারে। কারণ, সেসময় বাজারে আবারও নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে।