রাজপথে জনসমর্থন দেখাতে চায় আওয়ামী লীগ

রাজপথে জনসমর্থন দেখাতে চায় আওয়ামী লীগ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে নানা কর্মসূচি দিয়ে জনসমর্থন দেখাতে চায় আওয়ামী লীগ। এমন চিন্তা থেকে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। শোকের মাস আগস্টে রাজপথে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি পালন করেনি আওয়ামী লীগ। শুধু শোক দিবসকেন্দ্রিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন নেতাকর্মীরা। তবে আজ থেকে নির্বাচনকেন্দ্রিক মাঠের কর্মসূচিতে যাচ্ছে দলটি। আজ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগ ঢাকা বড় ছাত্র জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে। সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানের এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বড় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া চলতি মাসে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে এমন কর্মসূচি নিয়মিতই হবে। দলীয় সূত্র জানায়, সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত আমাদের টানা কর্মসূচি থাকবে।

প্রতিটি কর্মসূচিতে ব্যাপক লোকসমাগম করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নেতারা জানিয়েছেন, রাজধানীর পাশাপাশি সারা দেশে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এজন্য শিগগিরই তৃণমূলকে কেন্দ্র থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল, তাই প্রতিটি সমাবেশে গণমানুষের ঢল নামবে। প্রতিপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া হবে, কোনো ষড়যন্ত্র কিংবা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার কোনো চক্রান্ত সফল হবে না। বরং দেশকে কেউ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে দেশের জনগণই রাজপথে থেকে তাদের প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে মোকাবিলায় ব্যাপক জনসমাগমের কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে থাকবে। এর মাধ্যমে সরকারের প্রতি জনসমর্থনের পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক শক্তিও প্রমাণ করতে চায় তারা। সরকার হটানোর একদফা দাবিতে মাঠে কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। সামনে তারা কেমন কর্মসূচি দেয় তার উপর ভিত্তি করে আওয়ামী লীগও কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকবে।

আজ ঐতিহাসিক সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশ এবং শনিবার আগারগাঁওয়ে পুরনো বাণিজ্যমেলা মাঠে সুধী সমাবেশে লাখো মানুষের সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি রয়েছে। সেপ্টেম্বরের শুরুতেই দু’টি সমাবেশ দিয়ে দলীয় জনসমর্থনের বিষয়টি জানান দিতে চান নেতারা। দু’টি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষমতাসীন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মানবজমিনকে বলেন, এ দু’টি সমাবেশই জনসমুদ্রে পরিণত হবে। দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েতের মাধ্যমে রীতিমতো জনসমুদ্রে পরিণত করতে চান আয়োজকরা।

বিশেষ করে ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকে সাধ্যমতো নেতাকর্মীদের তারুণ্যের সমাবেশে উপস্থিত নিশ্চিত করতে গত প্রায় একমাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে পাঁচ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেবে। অন্যদিকে, আগামীকাল শনিবার ঢাকা উড়ালসড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) উদ্বোধনের পর আগারগাঁওয়ে পুরনো বাণিজ্যমেলা মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশকেও জনসমুদ্রে পরিণত করতে চায় আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই সুধী সমাবেশে ঢাকা মহানগরী ছাড়াও ঢাকা বিভাগের সব জেলা থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন।

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা জানান, এই সুধী সমাবেশে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নেয়া শেষ। দু’টি সমাবেশে বড় জমায়েত নিশ্চিত করতে সংগঠনের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নানা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাংগঠনিক ইউনিটকে সর্বোচ্চ সংখ্যায় নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা মহানগরীর ছোট-বড় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঐতিহাসিক সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে যোগদানেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, শনিবারের সুধী সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করে বড় ধরনের সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করতে চায় আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লা থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক নেতাকর্মীর বাণিজ্যমেলার মাঠে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দফায় দফায় বৈঠক করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। গত ২২শে আগস্ট তেজগাঁও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী সাংগঠনিক জেলার নেতাদের মতবিনিময় সভায় সুধী সমাবেশে পর্যাপ্ত লোকসমাগম নিশ্চিত করতে জেলা ও সাংগঠনিক ইউনিটগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শুধু এ দু’দিনই নয়, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ঢাকা ছাড়াও সিলেট, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বড় বড় সমাবেশ হবে। আর সবকিছুই আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশে নির্বাচনী জোয়ার তোলার টার্গেট থেকেই করা হবে।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ