শাহবাগ থানায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর জটিল হচ্ছে তদন্তের সমীকরণ!

শাহবাগ থানায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর জটিল হচ্ছে তদন্তের সমীকরণ!

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় ডিএমপির রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার ও দুই দফা বদলির পর অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ মনে করেন, ঘটনার নেপথ্যের কারণ খুঁজে বের করা দরকার।

ঘটনার সূত্রপাত বারডেম হাসপাতালে। সেখানে ঠিক কী ঘটেছিল, তার তদন্ত হওয়া দরকার। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, থানায় নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতনের ঘটনার সূত্রপাত বারডেম হাসপাতালে। রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনই আগে এডিসি হারুনের ওপর হামলা করেছিলেন— এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সেটাও তদন্তে আসা উচিত।

তবে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলছেন, তদন্তকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারা দোষী, তা বলা যাচ্ছে না। দুজন অফিসারকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গতকাল এডিসি হারুন অর রশিদের হাতে মারধরের শিকার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমকে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এসব কথা বলেন কমিশনার।এর আগে গত শনিবার রাতে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতন করেন পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ। ভুক্তভোগী দুজন হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম।

 

নারীঘটিত একটি ঘটনার জেরে শাহবাগ থানায় তাদের মারধর করা হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জেরে রাতে শাহবাগ থানার সামনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে মধ্যরাতে ঘটনা মীমাংসা করেন।

ঢাবি ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, এডিসি হারুন শনিবার রাতে আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। নারী কর্মকর্তার স্বামীও একজন সরকারি কর্মকর্তা। তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বািবতণ্ডা হয়। পরে এডিসি হারুন দুই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাকে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। এরপর অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়লে ওই দুজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

গত ১০ সেপ্টেম্বর বিকালে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের নির্দেশে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। দুদিনের মধ্যে দ্রুত তদন্তকাজ সম্পন্ন করে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এরপর হারুনকে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) বদলি করা হয়। আবার ওইদিন বিকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে এপিবিএনে বদলি করা হয়।

তবে সোমবার বদলি করা এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ