ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে সহায়ক জামানত হিসেবে এখনো জমি বা ফ্ল্যাটের মতো স্থাবর সম্পত্তিনির্ভর দেশের ব্যাংক খাত। যদিও ব্যাংকের কাছে বন্ধক থাকা সম্পদ বিক্রি করেও খেলাপি ঋণ আদায় সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, জামানতের সম্পদ বিক্রি করে দেশের ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের মাত্র ১২ দশমিক ৭৭ শতাংশ আদায় করতে পারছে। সে অনুযায়ী, জামানত থাকার পরও অনাদায়ী থেকে যাচ্ছে ৮৭ শতাংশের বেশি খেলাপি ঋণ। জামানত বিক্রি করে অবলোপন করা ঋণ আদায়ের পরিস্থিতি আরো খারাপ।
জামানতের সম্পদ বিক্রি করে ঋণ আদায় সম্ভব না হলেও ব্যাংকগুলো জমি-বাড়ি বন্ধক রেখে ঋণ বিতরণ বাড়িয়েছে। এক যুগ আগে ২০১০ সালে জমি বন্ধকের বিপরীতে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা, যা ছিল ওই সময় বিতরণকৃত মোট ঋণের ৪৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। চলতি বছরের জুন শেষে জমি বন্ধক রেখে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৯ লাখ ২০ হাজার ৯০৪ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। সে অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের ৬৩ দশমিক ৬৮ শতাংশই গেছে জমি-ফ্ল্যাট-বাড়িসহ রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি বন্ধকের বিপরীতে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ব্যাংক খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি ও ঋণের নামে অর্থ লোপাটের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সংগতি রেখেই জমি বন্ধক রেখে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ বের করা অপেক্ষাকৃত সহজ। সরকারি খাসজমি, বিতর্কিত মালিকানার জমি বন্ধক রেখেও ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ বের করে নেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাংক কর্মকর্তারা সহযোগীর ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রভাবশালীদের বন্ধকি জমির মূল্য কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে। এ কারণে জামানতের সম্পদ বিক্রি করে খেলাপি ঋণ আদায় সম্ভব হচ্ছে না।বিস্তারিত