সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.)-এর মাজারের আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে একটি বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাজার এলাকাকে আরও বেশি দর্শনার্থী, মুসল্লি ও পর্যটকবান্ধব করে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
৩০ কোটি টাকার এই প্রকল্প ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাস হয়েছে। এবার শুধু অর্থ ছাড়ের অপেক্ষা। প্রকল্পের আওতায় দুই একর জমি অধিগ্রহণ, বহুতল পার্কিং প্লেস নির্মাণ, কবরস্থান সংস্কার, নারী ও পুরুষ দর্শনার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার এবং ৫০টি বাথরুম নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সিসিক কর্মকর্তারা। এ ছাড়া দরগাহ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আবাসিক হল নির্মাণ করা হবে।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের প্রধানতম আকর্ষণ হযরত শাহজালাল মাজার। সব ধর্মের মানুষের কাছে এটি পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থী মাজার জিয়ারত করতে আসেন। সিলেটে ঘুরতে আসা পর্যটকরাও একবার মাজার এলাকা ঘুরে যান। মাজারের জালালি কবুতর, পুকুরের বড় বড় গজার মাছ, কিংবা শাহজালালের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র পর্যটকদের আকর্ষণ করে। ফলে প্রতিদিনই ভিড় লেগে থাকে মাজার এলাকায়। পর্যটক ও দর্শনার্থীদের গাড়ি মাজারের সড়কে যত্রতত্রভাবে পার্কিংয়ের কারণে এই এলাকায় সব সময় যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে রাতে যারা মাজারে আসেন, তাদের গাড়িতে বা খোলা আকাশের নিচেই রাত কাটাতে হয়। বাথরুম সুবিধাও যথেষ্ট নয়। ফলে ওরস বা এ রকম কোনো আয়োজনে মাজার এলাকায় বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থী জড়ো হলে সবাইকে পড়তে হয় বিপাকে।
সিসিকের কর্মকর্তারা জানান, ধর্মীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান হওয়ায় নগরের কেউ মারা গেলে শাহজালাল মাজার কবরস্থানেই তাকে দাফন করতে চান মৃতের স্বজনরা। কিন্তু কবরস্থানের জায়গা ছোট হওয়ায় এই চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মাজার কর্তৃপক্ষকে। নগরবাসীর এই চাওয়ার বিষয়টি বিচেনায় নিয়ে গৃহীত প্রকল্পে দরগাহ কবরস্থানকে সংস্কার করে এর পরিসর বাড়ানো হবে।
একই সঙ্গে এলাকার ভেতরে একটি প্রাচীন মাদ্রাসা রয়েছে। সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসিক সুবিধা না থাকায় তারাও নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। এই মাদ্রাসার জন্যও নির্মিত হবে বৃহৎ আবাসিক ভবন।
শাহজালাল মাজারের অবস্থান নগরের ১নং ওয়ার্ডে। সিলেটে সিটি করপোরেশনের ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী বলেন, ‘মাজার এলাকাকে ঘিরে একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে মাজারের যেমন সৌন্দর্য বাড়বে তেমনি দর্শনার্থী ও এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং মাজারে মরদেহ দাফন নিয়ে জটিলতাও দূর হবে। এ ছাড়া সড়কের শৃঙ্খলাও আসবে।’
তিনি জানান, মাজারে আগত যেসব নারী-পুরুষ খোলা ময়দানে রাত যাপন করেন, তাদের আর খোলা জায়গায় ফুটপাতে থাকতে হবে না। দর্শনার্থীর জন্য বড় থাকার জায়গা এবং তাদের জন্য ৫০টি বাথরুম নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের জন্য গেট এলাকায় দুই একরের বেশি জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
এ প্রকল্প প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, ‘এই প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড় পেলেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এ প্রকল্পের আওতায় হযরত শাহজালাল মাজারকে মানিকপীর (র.)-এর মাজারের মতো সংস্কার করা হবে। মাজারের মূল ফটকে একটি বহুতল বিশিষ্ট পার্কিং জোন গড়ে তোলা হবে। যাতে মাজারে আসা লোকজনের গাড়ি আর রাস্তায় না থাকে। এই ভবনের পাশেই গড়ে তোলা হবে আরেকটি ভবন। যেখানে থাকবে কমিউনিটি হল। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আবাসিক ভবনও তৈরি হবে এ প্রকল্পের আও