নানান নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়। ছিটকে পড়েন জাতীয় দলের দেড় দশকের ওপেনার তামিম ইকবাল। তাকে বাদ দেওয়া নিয়ে গত রাত থেকেই সর্বত্র আলোচনা।
এই প্রেক্ষাপটে বুধবার বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে তামিম তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা দেন। সেখানে তামিম গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেন।
ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে মাঠে ফেরেন তামিম ইকবাল। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটি ওয়ানডেও খেলেন তিনি। তৃতীয় ম্যাচে বিশ্রাম চান। দেশসেরা ওপেনার তখন সংশ্লিষ্টদের জানান, বিশ্বকাপের আগে পিঠের পুরনো চোট নিয়ে সাবধানতা অবলম্বনেই তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে চান না তিনি। তবে এরপর গোটা দৃশ্যপটই পাল্টে যায়। তিনি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাচ্ছেন কি পাচ্ছেন না, তা নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে। এক পর্যায়ে তামিমকে ছাড়াই বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা করে বিসিবি।
বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পাওয়ায় নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বলেন, ‘একটা বিষয় আপনাদের স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমি কোনো সময় কাউকে বলিনি যে, পাঁচটা ম্যাচের বেশি খেলতে পারব না। এই কথাটা কোনো সময়ই হয়নি। আমি নিশ্চিত গতকাল (সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন) নান্নু ভাইও বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। এই একটা মিথ্যা কথা, ভুল কথা…আমি জানি না কীভাবে গণমাধ্যম এই কথাটা পেলো, কিংবা কে এই কথাটা ছড়িয়েছে! এই জিনিসটা পুরোপুরি মিথ্যা।’
তামিম বলেন, ‘মিডিয়াতে যে জিনিসটা আসছে, ইনজুরি কিংবা ৫ ম্যাচ খেলার শর্ত- আমার মনে হয় না আমার বিশ্বকাপে না খেলার পেছনে এর কোনো প্রভাব আছে। আমি এখনো ইনজুরড হইনি। ব্যথা থাকতে পারে, কিন্তু আমি এখনো চোটে পড়িনি। বোর্ডের শীর্ষ পর্যায়ের একজন আমায় ফোন করলেন। তিনি আমাদের ক্রিকেটের সঙ্গে বেশ ভালোভাবেই জড়িত। তিনি বললেন যে, তুমি তো বিশ্বকাপ খেলতে যাবে। তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলাতে হবে। এক কাজ করো, আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলো না তুমি। আমি বললাম, ভাই এটা তো আরও ১২-১৩ দিনের কথা। এই সময়ের মধ্যে আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবো। আমি কী কারণে খেলব না।’
এই ওপেনার জানান, এরপর তাকে লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিংয়ের প্রস্তাবও দেয়া হয়। বিসিবির সেই কর্তা তামিমকে বলেন, ‘তুমি যদি খেলো, তাহলে আমরা এমন একটা পরিকল্পনা করছি, তোমাকে আমরা নিচে ব্যাটিং করাবো’।
তামিম বলেন, ‘আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে ব্যাটিং করেছি। কোনো দিন নিচে ব্যাটিং করিনি। আমার এমন কোনো অভিজ্ঞতাও নেই। স্বাভাবিকভাবেই তার কথাটা আমি ভালোভাবে নেইনি। আমি কিছুটা উত্তেজিতও হয়ে গিয়েছিলাম। আমার কাছে বিষয়টি পছন্দ হয়নি। আমার কাছে মনে হচ্ছে, আমাকে জোর করে করে অনেক জায়গায় বাধা দেয়া হচ্ছে।’
‘আরেকটা জিনিস নতুন করে বলি। তখন আমি বললাম, দেখেন, আপনারা একটা কাজ করেন, যদি আপনাদের এমন চিন্তাধারা থাকে, তাহলে আপনারা আমাকে পাঠায়েন না। আমি এই নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না। প্রতিদিন আপনারা আমাকে একেকটা নতুন জিনিস ফেস করাবেন, আমি এই জিনিসগুলোয় থাকতে চাই না। তারপরও ফোনে ওনার সঙ্গে আমার অনেক কথাবার্তা হয়। সেগুলো এই প্ল্যাটফর্মে না বলাই ভালো। এটা আমার আর ওনার মধ্যেই থাক। তারপরও স্ট্রংলি বলেছি, যদি এগুলো হয়, আমাকে রাখিয়েন না। আমি এই নোংরামোর মধ্যে থাকতে পারব না। আমি এইসব মানতে পারব না’, যোগ করেন তামিম।