বিনিয়োগের লোভনীয় ছক দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার ঘটনা এ বার দেশের তথ্যপ্রযুক্তি রাজধানী বেঙ্গালুরুতে। অভিযান চালিয়ে পুলিশ ছয় প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। আপাতত ভুয়ো সংস্থাটির পাঁচ কোটি টাকা ‘ফ্রিজ়’ করে রাখা হয়েছে।
মাসিক ভিত্তিতে ১ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই দৈনিক ভিত্তিতে মিলতে থাকবে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। হোয়াট্সঅ্যাস, টেলিগ্রামের মতো সমাজমাধ্যমের অ্যাপ ব্যবহার করে এ ভাবেই প্রতারণার জাল বিছিয়েছিলেন প্রতারকরা। বিপুল মুনাফার লোভে সেই ফাঁদে পা দেন বহু মানুষ। প্রতারকদের গ্রেফতারির সঙ্গে যুক্ত এক সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, এ ভাবেই লোভের বশে হাজার হাজার মানুষ ওই সংস্থায় বিনিয়োগ করেছিলেন। গড়ে প্রত্যেকের বিনিয়োগের অঙ্ক ছিল, ১ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। এ ভাবে বাজার থেকে তোলা হয়েছিল মোট ৮৫৪ কোটি টাকা।
বিনিয়োগকারীদের বলা হয়েছিল, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর থেকে বিনিয়োগ করা অর্থ প্রত্যাহার করে নিতে পারবেন তাঁরা। কিন্তু বিনিয়োগ পর্ব শেষ হতেই উধাও হয়ে যান সংস্থার কর্তারা। টাকা তুলতে না পেরে প্রতারিত হয়েছেন বলে বুঝতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। তাঁরা পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নামে পুলিশ।
সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানাচ্ছেন, বিনিয়োগ করা টাকা প্রতারকরা বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্ট অপশন (অনলাইনে খরচ মেটানোর বিশেষ পদ্ধতি)-এর মাধ্যমে অন্যত্র ঘুরিয়ে দেন। তার পর সেই টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ঘুরে ক্রিপ্টোকারেন্সি বা গেমিং অ্যাপে মজুত হতে থাকে। এই পদ্ধতিতে টাকার উৎসের খোঁজ পাওয়া কঠিন। পুলিশ তদন্তে নেমে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে। শুধু বেঙ্গালুরুই নয়, এই প্রতারণাচক্রের জাল গোটা দেশেই ছড়িয়ে রয়েছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। কর্নাটকের সীমা ছাড়িয়ে আরও একাধিক রাজ্যে বহু মানুষকে সর্বস্বান্ত করার পিছনেও ধৃত প্রতারকদের হাত রয়েছে বলেও মনে করছে পুলিশ।