অনেক দিন ধরেই অর্থনৈতিক সংকটে দেশ। উত্তরণের চেষ্টাও চলছে। তবে কোনো কিছুতেই অর্থনীতির হারানো তেজ ফেরানো যাচ্ছে না। দিন যতই যাচ্ছে, বিভিন্ন সূচকে ভালো করার সুখবরগুলোও হারিয়ে যেতে বসেছে। বিভিন্ন সংস্থার হালনাগাদ তথ্য বলছে, অর্থনীতির প্রায় সব সূচকই এখন নিম্নমুখী। সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে রিজার্ভ ও রেমিট্যান্স নিয়ে। এর সঙ্গে ডলারের বাজারে চলমান অস্থিরতা অর্থনীতির সব সম্ভাবনাকে অনেকটা থমকে দিয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে।
আর নিত্যদিনের যন্ত্রণা হয়ে উঠেছে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি। এটি একদিকে মানুষের সঞ্চয়ের টুঁটি চেপে ধরছে, অন্যদিকে ক্রেতার সক্ষমতায় চিড় ধরিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। এতে সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যেও যেমন তৈরি হয়েছে স্থবিরতা, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয়েও বিরাট ঘাটতি তৈরি হয়েছে। আবার সরকারের আয় কমে যাওয়ায় ব্যাংক থেকে ঋণ করার প্রবণতা বাড়ছে, যা কমিয়ে দিচ্ছে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ। বৈদেশিক বিনিয়োগ ও ঋণ পরিস্থিতিতেও চলছে ভাটা। নির্বাচনী অনিশ্চয়তাকে কেন্দ্র করে এ পরিস্থিতি চলতি অর্থবছর আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর শেয়ারবাজারের পরিস্থিতি তো আরও করুণ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরকার চিত্রও উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো। সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে আপাতত কোনো সুখবরের আভাস মিলছে না।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর কালবেলাকে বলেন, অর্থনীতির মানদণ্ড নির্ধারক গুরুত্বপূর্ণ সব সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা খুব খারাপ লক্ষণ। এর কোনোটাই ‘রোল মডেল অর্থনীতি’কে চিহ্নিত করে না। বরং চরম সংকটাপন্ন অবস্থারই বহিঃপ্রকাশ বলা যায়।
তিনি দাবি করেন, ‘বর্তমান অর্থনীতির কাঠামোগত অনেক সমস্যা আছে। সরকার সেখানে নজর দিচ্ছে না। মূল সমস্যা রাজস্ব আদায়ে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি বলেই সরকারকে ধার করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংককেও বাধ্য হয়ে টাকা ছাপাতে হচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে। অথচ এ সমস্যাটি একেবারেই আমলে নেওয়া হয়নি। গত ১৫ বছর এ খাতে কোনো সংস্কার হয়নি। ব্যবসায়ীদের খুশি রাখতে সেদিকে যাচ্ছে না সরকার।’বিস্তারিত