আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছেআফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, শনিবার সকালের দিকের এই ভূমিকম্পের পর চারটি বড় ধরনের আফটারশক হয়েছে; যার কেন্দ্রস্থল ছিল ওই অঞ্চলের বৃহত্তম শহরের কাছে।
ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার আঘাত হানা ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল দেশটির হেরাত শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে। এই ভূমিকম্পের পর দেশটিতে ৫ দশমিক ৫, ৪ দশমিক ৭, ৬ দশমিক ৩ ও ৫ দশমিক ৯ মাত্রার চারটি শক্তিশালী আফটারশক অনুভূত হয়েছে।
হেরাত থেকে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির একজন প্রতিনিধি বলেছেন, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার সময় প্রথম ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ সময় শহরের স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানিরা ভবন ছেড়ে রাস্তায় পালিয়ে যান। তবে এতে এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
৪৫ বছর বয়সী হেরাতের বাসিন্দা বশির আহম এএফপিকে বলেন, আমরা অফিসে ছিলাম। সেই সময় ভবন কেঁপে ওঠে। দেওয়ালের প্লাস্টার খুলে নিচে পড়ে যায় এবং দেওয়ালে ফাঁটল ধরেছে। ভবনের কিছু অংশ ধসে পড়েছে।
তিনি বলেন, মোবাইলের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় আমি পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারি নাই। আমি অত্যন্ত চিন্তিত এবং ভীত। এটা অত্যন্ত ভয়াবহ।
প্রথম ভূমিকম্পের পর বাড়িঘর থেকে লোকজন রাস্তায় নেমে আসেন। তাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশুকেও দেখা গেছে। ভূমিকম্পের পর চারবার আফটারশক অনুভূত হওয়ায় আতঙ্কিত লোকজন প্রায় এক ঘণ্টায় ধরে রাস্তায় অবস্থান করেন।
ইউএসজিএসের প্রাথমিক তথ্য বলছে, আফগানিস্তানে এই ভূমিকম্পে শত শত মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হতাহত ও ব্যাপক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে এই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আঞ্চলিক বা জাতীয় পর্যায়ে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
তবে ভূমিকম্পের পর তাৎক্ষণিকভাবে তালিবান প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এএফপি। এর আগে, ইউএসজিএস জানায়, আফগানিস্তানে আঘাত হানা প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ২। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে হেরাত শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার গভীরে।
হেরাতের পূর্বাঞ্চলে ১২০ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে ইরানের সাথে। এই শহরটিকে আফগানিস্তানের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে মনে করা হয়। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, হেরাত প্রদেশের রাজধানী হেরাত শহরে ১৯ লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে।
গত বছরের জুনে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার এক ভূমিকম্পে এক হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। গত কয়েক দশকের মধ্যে আফগানিস্তানে এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প বলে সেই সময় দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়।
সূত্র: এএফপি।