আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তারা। এজন্য তপসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মাঠ পর্যায়ের নির্বাচনি অফিস ও তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে তারা বলেছেন, রিটার্নিং অফিসার হিসেবে আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন অফিসাররা সক্ষম। ইতিমধ্যে উপনির্বাচনসহ স্থানীয় নির্বাচনে সেই সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন তারা। এছাড়া নির্বাচনের আগেই ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য নির্বাচনি সামগ্রী যাতে দ্রুত পাঠানো হয়, সেই দাবিও জানানো হয়।
গতকাল শনিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কমিশনের মতবিনিময় সভায় এসব দাবি উঠে আসে। সভায় সিইসি ছাড়াও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এতে সিইসি, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান ও বেগম রাশেদা সুলতানা কর্মকর্তাদের সামনে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
সভায় সূচনা বক্তব্যে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন যাতে অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর হয়, সে জন্য আমাদের প্রয়াসের কোনো ঘাটতি থাকবে না। আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের সহায়তার ওপর নির্ভর করতে হবে।’ তিনি বলেন, সরকারের জনপ্রশাসন, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় কীভাবে সুদৃঢ় ও সহজ হবে, সেটা বের করে নির্বাচনের যে উদ্দেশ্য, অর্থাৎ অবাধে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচনের ফলাফল উঠে আসবে। আমরা সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। সমাপনী বক্তব্যে সিইসি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতি জোর দেন। তিনি বলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে হবে। তবে অংশগ্রহণমূলক মানে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। নির্বাচনে যাতে ভোটার উপস্থিতি বাড়ে, বিষয়টি কর্মকর্তাদের নজরে রাখার নির্দেশনা দেন।
সভায় একজন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে সারা দেশের দেড় শতাধিক নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আমরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আসন্ন নির্বাচনে যাতে নির্বাচনি কর্মকর্তা ও নির্বাচনি অফিসগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হয়, সেই দাবি জানাচ্ছি। নির্বাচনের সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের বাড়তি নিরাপত্তা থাকলেও নির্বাচন অফিসগুলোয় সেইভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হয় না।
এছাড়া একাধিক নির্বাচনি কর্মকর্তা বলেন, জেলা প্রশাসকদের বরাবরই রিটার্নিং কর্মকর্তা করা হয়। এবার নিজস্ব কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে অন্তত অভিজ্ঞদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে দাবি জানানো হয়। এছাড়া কর্মকর্তারা নিজেদের বিভিন্ন সমস্যার কথা নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরেন। সেই সব সমস্যা সমাধানের জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করেন।