উগ্রপন্থিদের ফর্মুলা ‘কাটআউট’ পদ্ধতি। এ কৌশলেই চোরাকারবারিরা টার্গেট গন্তব্যে স্বর্ণের চালান পৌঁছে দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে উড়োজাহাজে চেপে বাহক অবৈধ উপায়ে স্বর্ণের বার নিয়ে বাংলাদেশে ঢোকে। এর পর ‘কাটআউট’ পদ্ধতিতে চার থেকে পাঁচবার হাতবদল। এভাবেই বাংলাদেশ হয়ে চোরা স্বর্ণ চোরাই পথে চলে যায় পাশের দেশ ভারতে।
পাচার প্রক্রিয়ায় তারা ব্যবহার করে বেশ কিছু কৌশল ও সাংকেতিক কোড। চক্রের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা জানে না একে অন্যের নাম-পরিচয়। যখন হাতবদলের সময় হয়, তখন যে ব্যক্তির কাছে চালান পৌঁছাতে হবে শুধু তার কাছে থাকা নির্দিষ্ট একটি টাকার নোটের সিরিয়াল নম্বর হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্য কোনো মাধ্যমে বাহককে জানানো হয়। কখনও কখনও বলা হয়, যে ব্যক্তি ছেঁড়া টাকার নোট দেখাবে, তার হাতেই যাবে স্বর্ণ। যেসব স্পটে স্বর্ণ হাতবদল হয়, এর আশপাশে নজরদারিতে থাকে আলাদা আরেকটি গ্রুপ। আসল ব্যক্তির কাছে চালান পৌঁছাচ্ছে কিনা, তা তদারকিতে থাকে তারা।
দীর্ঘদিন ধরেই চোরাকারবারিরা এ পদ্ধতি ব্যবহার করে স্বর্ণ পাচার করছে। এ ক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশকে নিরাপদ পথ ভাবছে। জব্দ স্বর্ণের পরিসংখ্যানও দিচ্ছে সে তথ্যের প্রমাণ। দেশের সীমান্ত এলাকায় ২০১৯ সালে এক বছরে পাচারের সময় জব্দ করা হয়েছিল ৫৪ কেজি ২৩৪ গ্রাম স্বর্ণ। আর এ বছরের প্রথম আট মাসেই ধরা পড়েছে ১৪২ কেজি ৮১৫ গ্রাম। ধরা পড়া স্বর্ণের এ হিসাবই বলে দিচ্ছে, অবৈধ পথে চালান জব্দের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন গুণ। তবে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বছরে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে এর চেয়ে ২০ গুণ।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বলছে, দেশের জল, স্থল ও আকাশপথ ব্যবহার করে প্রতিদিন অন্তত ২০০ কোটি টাকার স্বর্ণালংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে ঢুকছে। সে হিসাবে এক বছরে টাকার অঙ্কে স্বর্ণ চোরাচালানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি।বিস্তারিত