সমাজসেবা অধিদপ্তর  দুস্থ রোগীদের অনুদানের অর্থ জালিয়াতি ও আত্মসাতের অভিযোগ

সমাজসেবা অধিদপ্তর দুস্থ রোগীদের অনুদানের অর্থ জালিয়াতি ও আত্মসাতের অভিযোগ

যশোরের নাছিমা বেগম ক্যান্সার চিকিৎসায় সহায়তার জন্য সরকারের অনুদান পেতে আবেদন করেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ে। তবে তার আবেদনের সঙ্গে রোগ নিরীক্ষার যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে তা নাছিমা বেগমের নয়। তবুও তাকে সরকারের নির্ধারিত অনুদানের ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের ষাটোর্ধ্ব আলী চৌধুরী জন্মগত হৃদরোগী উল্লেখ করে সরকারের অনুদান চেয়ে করেছিলেন আবেদন। তবে তিনি জন্মগত হৃদরোগী নন এবং আবেদনের সঙ্গে রোগ নিরীক্ষার কোনো প্রতিবেদন সংযুক্ত না থাকলেও তাকে অনুদান দিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়। এক অর্থবছরে একটি অনুদান পাওয়ার কথা থাকলেও ঢাকার আকলিমা খাতুন পেয়েছেন তিনটি। সমাজসেবা অধিদপ্তরের দুস্থ, অসহায় ও গরিব রোগীদের ছয়টি রোগের চিকিৎসায় গৃহীত আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির অনুদানের অর্থ বিতরণে এমন অনেক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।

ছয়টি রোগ (ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়া) আক্রান্ত গরিব রোগীদের আর্থিক সহায়তার জন্য এক দশক আগে এ কর্মসূচি চালু করে সরকার। সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর সারা দেশে এটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে চলমান এ কর্মসূচিতে বরাদ্দকৃত অর্থের পুরোটা প্রকৃত রোগীদের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে বিভিন্ন জেলা কার্যালয় পর্যন্ত অর্থ বণ্টনের ক্ষেত্রে অন্তত ছয় ধরনের অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) অডিট প্রতিবেদনে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ্ মোস্তফা কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বণিক বার্তাকে তিনি জানান, এসব অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ‘হয়তো’ লিখিত উত্তর দেয়া হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট করে এর বেশি তিনি বলতে পারেননি।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ওই ছয়টি রোগে আক্রান্ত গরিব রোগীদের শনাক্ত করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জনবল, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনের সহযোগিতায় নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করে প্রকৃত দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। নির্বাচিত প্রত্যেক গরিব রোগীকে এককালীন ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়। তবে অনুদান বৃদ্ধি ও হ্রাসের ক্ষমতা সরকার সংরক্ষণ করে। অনুদান প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আবেদনকারী নির্বাচনের কিছু মানদণ্ড রয়েছে। এরপর প্রাপ্তির জন্য নির্দিষ্ট শর্ত ও বাছাই প্রক্রিয়া মেনে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। কর্মসূচি শুরুর অর্থবছরে ৫৬১ জনকে ২ কোটি ৮২ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়। এরপর প্রতি বছরই বাড়তে থাকে বরাদ্দের পরিমাণ। ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ পর্যন্ত ১০ অর্থবছরে মোট ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এসব অর্থবছরে ২ লাখ ৬ হাজারের বেশি রোগী সহায়তা পেয়েছেন।বিস্তারিত

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ