নিজস্ব প্রতিবেদক
এক দফা দাবিতে দেশজুড়ে হরতালের পর অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শেষ হচ্ছে দলটির দ্বিতীয় দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ। হরতাল-অবরোধে দূরপাল্লার বাস ও নগর পরিবহন কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে চলমান আন্দোলনে পরের কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে দলটি।
গতকাল রবিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির পর আবার নতুন কর্মসূচি আসছে।
জানা গেছে, আজ সোমবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে বিএনপি। সে ক্ষেত্রে আগামীকাল মঙ্গলবার এক দিন বিরতি দিয়ে বুধবার ও বৃহস্পতিবার ফের হরতাল কিংবা অবরোধের ডাক দিতে পারে দলটি। পরের সপ্তাহে কী কর্মসূচি থাকবে, সে সিদ্ধান্ত গতকাল পর্যন্ত হয়নি। দলের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘সরকার নানা ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করে বিএনপির ওপর দায় চাপাবে। আমাদের নেতাকর্মীরা, সহযোগী-অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আপনারা প্রত্যেকে সজাগ থেকে শুধু জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করে রাস্তায় নামবেন। অবরোধ কর্মসূচি যেটা চলছে সেটা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে যাবেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা বলেন, টানা অবরোধের মধ্যে থাকলে কর্মসূচি নিয়ে সবার মধ্যে একগুঁয়েমি তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া তফসিল ঘোষণার আগে-পরে কর্মসূচির তীব্রতা বাড়াতে হবে। এজন্য কর্মসূচিতে বৈচিত্র্য আনতে চায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
একটি সূত্র জানায়, নতুন কর্মসূচির বিষয়ে গত দুই দিন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে অবরোধ রেখে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ঘেরাও, অবস্থান ও অসহযোগ আন্দোলনের মতো প্রস্তাব ওঠে। তবে এগুলোর কোনোটি ‘যুৎসই’ মনে করছেন না নীতিনির্ধারকরা।
বৈঠকে কয়েকজন নেতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কঠোর কর্মসূচি ছাড়া বিকল্প নেই। তারা মনে করেন, ২৮ অক্টোবর সরকার পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে হরতাল-অবরোধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এখন তফসিল ঠেকাতে হলে বড় কর্মসূচি দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে শীর্ষ নেতারা বক্তব্য শেষ করার আগেই পুলিশের টিয়ারগ্যাস, গুলি, লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপসহ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষ হয়। হামলার প্রতিবাদে মহাসমাবেশ থেকে পরের দিন ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সর্বাত্মক হরতালের ডাক দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ওই কর্মসূচির পর এক দিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিন সারাদেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে অবরোধ পালন করে দলটি। এরপর গত রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার টানা অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়, যা শেষ হচ্ছে আগামীকাল সকাল ৬টায়।