অনলাইন ডেস্ক
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ও ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, হরতাল-অবরোধের নামে যারা গাড়ি পোড়ায়, মানুষের ওপর আক্রমণ করে তারা দেশ, জাতি ও সমাজের শত্রু। আমরা এদেরকে নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর। শেষ সন্ত্রাসী নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ব্রিগেড ৭১’ আয়োজিত ‘ধর্মান্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী দলগুলোর রাজনীতি এবং আমাদের করণীয়’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গর্তের মধ্যে যারা ঢুকেছে তাদেরকে গর্ত থেকে বের করে এনে শায়েস্তা করা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া এটা আমাদের দায়িত্ব। একাত্তর সালে বঙ্গবন্ধু যেভাবে পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি করার আহবান জানিয়েছিলেন, এখন আবার এই আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় এসেছে।
তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের পর মায়াকান্না করে, এত গ্রেপ্তার কেন হচ্ছে সেই কথা বলে- তাদের কাছে প্রশ্ন, কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি কি গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো হতে পারে? গাড়ির মধ্যে হেলপার ঘুমিয়ে আছে গাড়ি চলছে না, সেই গাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। ২৮ অক্টোবর তারা পুলিশ হত্যা করলো, পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালালো, ১৯টি অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিলো, শতাধিক পুলিশ আহত হলো এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলা করলো, ৩২ জন সাংবাদিক আহত হয়েছে। এগুলো যারা করে তো জঘন্য সন্ত্রাসী, হিংস্র হায়ানার চেয়েও হিংস্র এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জনগণের দায়িত্ব এবং সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। ‘ব্রিগেড ৭১’ কে অনুরোধ জানাবো যে আপনারা জনগণকে আরও সচেতন করে তুলুন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সবসময় সহযোগিতা করে এসেছে। সারাদেশে তারা সমাবেশ করেছে, সরকার নিরাপত্তা দিয়েছে। মাঝেমধ্যে নিজেরা মারামারি করেছে এর বাইরে গত ১৫ বছরে তাদের মিটিংয়ে একটা পটকাও ফোটে নাই। অথচ আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুঁড়ে আওয়ামী লীগের ২২ জনকে হত্যা, ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছিল। আমার শরীরে এখনো ৪০-৪২টি স্প্রিন্টার। অনেকের শরীরে শত শত স্প্রিন্টার, কেউ কেউ, পঙ্গু হয়েছে। বিএনপি প্রকাশ্যে জনসভায় হামলা চালিয়ে শাহ এস এম কিবরিয়াকে হত্যা, আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা, শেখ হেলাল এমপি, সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত এমপির জনসভায় হামলা করে অনেক মানুষকে হতাহত করেছিলো, কোটালিপাড়ায় ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিলো। এখনো তারা সন্ত্রাস অব্যাহত রেখেছে, সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে।
একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ব্রিগেড ৭১’ সংগঠনের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সাংবাদিক মোস্তফা হোসেইন উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধভিত্তিক আলোচনায় অংশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল নুর দুলাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, ‘ব্রিগেড ৭১’ এর যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম রাজু, ব্যারিস্টার সৌমিত্র সরদার, নৌ কমান্ডো মোশাররফ হোসেন, আতাউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল্লাহ ও সাংবাদিক শামীম আক্তার চৌধুরী আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।