বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। সঙ্গে পিঁয়াজের দামও কেজিপ্রতি কমেছে ১০ টাকা। তবে আগে থেকে পিঁয়াজের দাম বেশি থাকায় ভোক্তা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েনি। অন্যদিকে বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে চালের দাম। আলুর দাম গত সপ্তাহে কিছুটা কমলেও এ সপ্তাহে আবার বেড়েছে। আর নতুন করে আরও কিছুটা বেড়ে চিনির দাম কেজিতে ১৫০ টাকা ছুঁয়েছে। গতকাল রাজধানীর রায়েরবাগ মালিবাগ বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাসের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা। আর গত এক সপ্তাহে বেড়েছে কেজিতে প্রায় দুই টাকা। মাঝারি ও সরু চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১-২ টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মৌসুমের শেষ দিকে সরবরাহ কমায় বাজারে মোটা চালের দাম বাড়ছে। যদিও তথ্য বলছে, সরকারের গুদামে চালের মজুদ পর্যাপ্ত। পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মিলারদের কারসাজির কারণেই মূলত চালের দাম বেড়েছে। তারা বলছেন, মিল মালিকেরাই কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করেছে।
বাজারে মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৬ টাকায়, যা এক মাস আগে ৫০-৫২ আর এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৩-৫৫ টাকা। মাঝারি আকারের মধ্যে প্রতি কেজি বিআর-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৮ টাকায়। আগে এ চালের দাম ছিল ৫৪-৫৬ টাকা। আর প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭২ টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর বাজারগুলোতে এখন আলুর কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে। মাঝে দাম কিছুটা নিম্নমুখী হলেও এখন আবার বাড়ছে। স্বাভাবিক সময়ে বছরজুড়ে এ আলুর দাম থাকে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে বাজারে আলুর সরবরাহ কম। এর মধ্যে ভারত থেকে আলু আমদানি হচ্ছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় কম।
অন্যদিকে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়। পাড়া-মহল্লার কোন কোন দোকানে এ দাম ১৫০ টাকা পর্যন্ত। যেখানে গত ১ নভেম্বর চিনির বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে চিনি আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক অর্ধেক কমানো হয়। কিন্তু তার কোনো প্রভাব পড়েনি বাজারে। বরং এর মধ্যে দুই দফা চিনির দাম বেড়েছে। এদিকে, ভারত থেকে ডিমও আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তারও কিছুটা প্রভাব বাজারে রয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে বেশ কমেছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। খুচরা বাজারে এখন প্রতি ডজন ডিম ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৩০ টাকা দরে। যা পাড়া-মহল্লার দোকানে ১৪০ টাকা।
ডিমের সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির দামও কিছুটা কমেছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া সোনালি জাতের মুরগির কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি বাজার এখন শীতকালীন সবজিতে ভরপুর। এতে দামও কিছুটা কমছে। দুই-তিনটি ছাড়া বেশিরভাগ সবজি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। যেখানে দু-তিন সপ্তাহ আগেও সব ধরনের সবজির দাম ছিল আকাশছোঁয়া। তখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ছিল ১০০ টাকার আশপাশে। তবে দীর্ঘদিন ধরে স্বস্তি মিলছে না পিঁয়াজের দামে। যদিও শুক্রবার কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে ১২০ টাকা দরে দেশি পিঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় পিঁয়াজের এ দাম দ্বিগুণেরও বেশি। আমদানি করা পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে।