বিশ্বকাপ ভারতে, মাঠ ভারতের, স্পন্সর ভারতের, ব্রডকাস্টার ভারতের, মাঠে ১ লাখ ৩০ হাজার দর্শক ভারতের। এর আগে টানা ১০ ম্যাচ জয়ে অপরাজিত ভারত। শুধু বিশ্বকাপটা নেয়াই ছিলো বাকী। দর্শকরাও ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। পুরো মাঠের সব দর্শক সেজেছেন এমনভাবেই। যেখানে চোখ যাচ্ছিলো শুধুই দেখা যাচ্ছিলো নীল আর আকাশী।
মাঠে এসেছেন ভারত তথা বলিউডের সব বড় বড় নায়ক থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ। লেজেন্ড খেলোয়াড় থেকে শুরু করে ক্রিকেটারদের স্ত্রী। কে ছিলেন না মাঠে। ছিলেন শাহরুখ খান, রনবীর কাপুর, দীপিকা পাডুকান, আনুশকা সর্মা, শচিন টেন্ডুলকার, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঞ্চ রেডি, এসেছেন খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ যেনো সবকিছুই সাজানো স্ক্রিপ্ট অনুযায়ীই চলছিলো।
কিন্তু গল্পের শেষ অংশটা এতোটা ট্রাজেডির হবে, এটা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি ভারতের সমর্থকরা। ১৩০ কোটি ভারতীয় দর্শকের স্বপ্ন হয়তো ছিল নিজের নামের স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারতের হাতে ট্রফি তুলে দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যেটা দেখে উল্লাসে ফেটে উঠবে গোটা ভারত। হবে বলিউডে বায়োপিক। মিডিয়া আবারও বন্দনা করবেন রোহিত-কোহলি-শামিদের।
ভারতের অবশ্য আত্মবিশ্বাসী না হয়ে অন্য কোন পথও তো ছিলো না। টানা ১০ টি ম্যাচে যে দলটি শুধুই প্রতিপক্ষকে ডমিনেট করে এসেছে, একে একে প্রতিটি দলকে হারিয়েছে তীব্র ক্ষীপ্ততায়, যে দলের চোখে মুখে ফুটে উঠছিলো বিজয়ের হাসি। সেই দল ট্রফি নেবে না এটা তো শুধু ভারত না অন্য কোন দেশ এর দর্শকও তো কল্পনা করতে পারেনি।
কিন্তু হলো না। নরেন্দ্র মোদি, যিনি ক্ষমতার মসনদে বসে শাসন করেন ১৩০ কোটি ভারতীয়দের, পরিকল্পনা সাজান বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো দেশের সাথে বাণিজ্যের। যিনি ভারতকে নিয়ে গেছেন সুপার পাওয়ারদের কাতারে। এতো শক্তিশালী একজন মানুষকে বিষণ্ণ মুখে ট্রফিটি তুলে দিতে হলো বিপক্ষ দল অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের হাতে।
স্বপ্ন ভঙ্গ হলো, নাহ এবারও পারলেন না রোহিত-কোহলিরা। ভিরাট কোহলি তাও তো বলতে পারবেন তাঁর জীবনে একটা বিশ্বকাপ আছে। কিন্তু রোহিত শর্মার মতো একজন লেজেন্ডারি ক্রিকেটার শিরোপার এতো কাছে এসেও ছুঁতে পারলেন না স্বপ্নের ট্রফিটি। ভারত হয়তো আবারও স্বপ্ন দেখবে, হয়তো বিশ্বকাপ জিতবে আরও অনেকবার কিন্তু নিজেদের এতো দর্শকের সামনে বিশ্বকাপ উঁচিয়ে ধরার স্বপ্নটি হয়তো অধরাই রয়ে যাবে