দেশব্যাপী চলছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিল ও সংগ্রহ। মনোনয়নপত্র দাখিল ও সংগ্রহের সময় আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক দেখা যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনও অনেকটাই অসহায়, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ ছাড়া প্রতীক বরাদ্দের আগে মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ থাকলেও প্রার্থীরা তা মানছেন না। বিভিন্ন নির্বাচনি এলাকায় চলছে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মিছিল ও সভা-শোডাউন। অনেক প্রার্থী নির্বাচনি এলাকায় গাড়িবহর নিয়ে শোডাউন করছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বেশি অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে মনোনয়নপত্র দাখিল করা নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষও হয়েছে। ককটেল বিস্ফোরণ, গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। এদিকে তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আজ বিকাল ৪টায় শেষ হচ্ছে। তবে শেষমুহূর্তে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় পিছিয়ে দেওয়ার জন্য দুটি দল ইসির কাছে আবেদন করেছে। ইসি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন আচরণবিধি অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল কিংবা শোডাউন করা যাবে না। সংসদ নির্বাচন আচরণবিধিমালার ৬-এর (ঘ)৬ ধারায় উল্লেখ করা আছে, ‘জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয় এমন কোনো সড়কে জনসভা কিংবা পথসভা করা যাবে না। তাদের (রাজনৈতিক দল ও মনোনীত প্রার্থী) পক্ষে কোনো ব্যক্তিও অনুরূপ জনসভা ও পথসভা করতে পারবেন না।’ আচরণবিধিমালার ৮ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো রাজনৈতিক নিবন্ধিত দল বা দল মনোনীত ব্যক্তি বা স্বতন্ত্র কিংবা তাদের পক্ষে কোনো ব্যক্তি ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌযান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহনে মিছিল কিংবা মশাল মিছিল বের করতে কিংবা শোডাউন করতে পারবেন না।’
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
নেত্রকোনায় শোডাউন : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে নেত্রকোনায় বিভিন্ন প্রার্থীর শোডাউন চলছে। শহরজুড়ে বিভিন্ন স্লোগানে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা হচ্ছে ব্যাপকভাবে। গতকাল বিকালে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসনের নৌকার প্রার্থী সাজ্জাদুল হাসান। তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদ পারভেজের কাছে। এর আগে মোহনগঞ্জ থেকে শোডাউনের মাধ্যমে জেলা শহরে এসে মিছিল নিয়ে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। অন্যদিকে শহরে বিশাল শোডাউন করেছেন নেত্রকোনা-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফ খান জয়। তিনি নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে দেখা করে আসেন।
কুষ্টিয়ায় শোডাউন : কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুর রউফ দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দল বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল তিনি নির্বাচনি এলাকায় ফেরেন আচরণবিধি ভেঙে বিশাল গাড়িবহর নিয়ে। এ সময় তাকে বরণ করেন হাজারো নেতা-কর্মী। পরে গাড়িবহর নিয়ে নির্বাচনি এলাকায় শোডাউন দেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে খোকসা ও কুমারখালী নির্বাচনি এলাকায় পৌঁছালে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী মোটরসাইকেল ও গাড়িবহর নিয়ে তাকে বরণ করে নেন। এর আগে মঙ্গলবার আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সেলিম আলতাফ জর্জকে বরণ করে নিয়েছিলেন নেতা-কর্মীরা। জানা গেছে, আবদুর রউফ কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের খোকসার বিলজানি বাজার থেকে গাড়িবহরে যোগ দেন। বহরটি খোকসা ও কুমারখালী উপজেলা শহর প্রদক্ষিণ করে নিজবাড়ি বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রামে গিয়ে শেষ হয়। আচরণবিধি লঙ্ঘন করে গাড়িবহরে শোডাউনের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতা আবদুর রউফ বলেন, ‘আমি এখনো মনোনয়নপত্র জমা দিইনি। তাই আমি এখনো প্রার্থী না। আমার মনে হয়, আমি আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি। প্রার্থী হলে তখন আচরণবিধি ভঙ্গ হবে। আর আমি তো প্রত্যাহারও করতে পারি।’
রংপুরে বিশাল শোডাউন : রংপুর নগরীতে বিশাল শোডাউন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন রংপুর-৫ মিঠাপুকুর আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সদস্য রাশেক রহমান। গতকাল বিকালে তিনি ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুর আসেন। এ সময় নেতা-কর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এরপর শতাধিক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে তিনি রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান। রাশেক রহমান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর আগে মঙ্গলবার রংপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তুষার কান্তি মন্ডল নগরীতে বিশাল শোডাউন করেন। পরে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। রংপুর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ্ আল মোতাহসিম বলেন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। আমার জানা মতে আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়নি।
ফরিদপুরে বিশাল শোডাউন : ফরিদপুরে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। গতকাল বিকাল ৩টায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের কাছে তিনি তার মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা থেকে কয়েক শ মোটরসাইকেল ও গাড়িবহর নিয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন।
মাগুরায় শোডাউন : মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার পর প্রথমবার নিজ এলাকায় যান জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। গাড়িবহর নিয়ে ব্যাপক শোডাউনের মধ্য দিয়ে মাগুরা পৌঁছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার মাগুরা-১ আসনে তার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কথা। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে দুপুর ২টার দিকে তিনি কয়েক শ মাইক্রোবাস, কয়েক হাজার মোটরসাইকেল ও হাজার হাজার নেতা-কর্মী এবং তার ভক্ত সমর্থকরা তাকে নিয়ে শোডাউনের মাধ্যমে মাগুরা পৌঁছান। এ সময় গড়াই নদীর কামারখালী ব্রিজ এলাকায় উপস্থিত জনতা ও দলীয় নেতা-কর্মী সমর্থকরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। কালো রঙের একটি ছাদখোলা গাড়িতে সড়ক অতিক্রম করার সময় দুই পাশের জনতা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান। দলীয় কর্মীরা বলেন, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে সড়কপথে গাড়িবহর নিয়ে মাগুরায় পৌঁছান সাকিব। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত গড়াই সেতু এলাকায় ভিড় করে হাজারো মানুষ। সেখান থেকে ১২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মাগুরা শহরে পৌঁছাতে প্রায় ২ ঘণ্টা লাগে। এ সময় রাস্তার দুই পাশে দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি হাজারো ভক্ত ও সমর্থক ভিড় করেন। এতে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ-পিরোজপুর : পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ৪টি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জেপির চার নেতাকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার হওয়া চারজনের মধ্যে একজনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৫ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে পিরোজপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউদ্দিন মহারাজের সমর্থনে এবং জামায়াত-শিবিরের হরতাল-অবরোধ নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মিছিল চলছিল। এ সময় জেপি নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয় থেকে বের হলে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটানো হয় ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জেপির সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম উজ্জ্বল, পৌর জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব আহসানুল কিবরিয়া ফরিদ মল্লিক, উপজেলা জাতীয় যুব সংহতির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ সরদার, পৌর ছাত্রসমাজের আহ্বায়ক মাহাবুব শরীফ শুভকে গ্রেফতার করে। আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করার মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি এ চারজন। এরপর রাতে মামুনুর রশিদ সরদারের দেওয়া তথ্যে তার মাছের ঘের থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৫ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
নোয়াখালী : নোয়াখালীর সেনবাগে দুই প্রার্থীর সমর্থক (ছাত্রলীগ) নেতা-কর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। দুই পক্ষের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের একজন এএসআই ও এক সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। সেনবাগে মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী-২ সেনবাগ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া প্রকাশ তমা মানিকের এক অনুসারীর সঙ্গে সেনবাগ সরকারি কলেজে নৌকার প্রার্থী এমপি মোরশেদ আলমের এক অনুসারীর হাতাহাতি হয়। ওই ঘটনার জেরে সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ গেট এলাকায় তমা মানিকের এক অনুসারীকে মারধর করে এমপির অনুসারীরা। পাল্টাপাল্টি দুটি ঘটনার সূত্র ধরে রাত ৯টার দিকে সেনবাগ হাইস্কুল গেটে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।
কক্সবাজার : কক্সবাজারের চকরিয়ায় নৌকার প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদের সংবর্ধনা যাওয়ার পথে এক ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১০-১২ জনকে আহত করা হয়েছে। এ সময় ভাঙচুর করা হয় ৫-৬টি গাড়ি। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের রামপুর স্টেশন এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম জেলার ১৬ আসনে ১৫৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গতকাল বিকালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন চট্টগ্রাম-১৪ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় প্রায় ৩ শতাধিক নেতা-কর্মী তার সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বারান্দায় প্রবেশ করে। এ বিষয়ে নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো ৫-৬ জন লোক নিয়ে এসেছি। বাকিরা আমার সঙ্গে আসেনি, উৎসুক জনতা হতে পারে।’ একই বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আচরণবিধির বিষয়ে কঠোর নজর রাখছি। তবে আদালত ভবনে এমনিতেই অনেক লোকসমাগম থাকে। কিছু অতি উৎসাহী লোকজন প্রার্থীদের সঙ্গে ঢুকে যায় বলে আমরাও খেয়াল করেছি।’