অনলাইন ডেস্ক
পাকিস্তানে মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাড়ির সামনে একটি স্কুল তৈরি করেছিলেন রিফাত আরিফ। উদ্দেশ্য ছিল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরকে বিনামূল্যে লেখাপড়া করানো। কিন্তু আর্থিক সহযোগীতা না থাকায় ছিল না স্কুল চালানোর মতো ভবন কিংবা শিক্ষক। শুধু সম্বল ছিল মনোবল। সেই মনোবলকে সম্বল করেই রিফাত এখন সারা পৃথিবীর শিক্ষকদের আদর্শে পরিণত হয়েছেন। সীমাহীন অর্থাভাবে এক সময় যিনি স্কুল চালাতে হিমশিম খেতেন, সেই তিনিই এখন কোটিপতি!
পাকিস্তানের গণমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রিফাত আরিফ ‘সিস্টার জেফ’ নামেও পরিচিত। এই নারী শিক্ষাবিদের জন্ম পাকিস্তানের গুজরানওয়ালায়। স্কুল চালানোর অর্থ জোগাড়ের জন্য তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। সেই প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন আট ঘণ্টা কাজ করার পর সন্ধ্যায় স্কুলে ফিরে এসে চার ঘণ্টা ছেলেমেয়েদের পড়াতেন। রিফাতের এই পরিশ্রম বৃথা যায়নি। দীর্ঘ ২৬ বছর পর তাঁর স্কুলে এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০০ জন। সবাইকেই তিনি বিনামূল্যে শিক্ষা দেন।
রিফাতের এই মহানুভবতার জন্য গত মাসে তিনি ইউনেস্কোর ‘গ্লোবাল টিচার’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। ফ্রান্সের প্যারিসে পুরস্কার গ্রহণের মঞ্চে দাঁড়িয়ে রিফাত বলেন, শিক্ষকতা নিছক কোনো পেশা নয়। এটি এমন এক পেশা, যা পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি করে। আসুন, আমরা প্রতিটি শিশুকে শেখার সুযোগ দেই, স্বপ্ন দেখার সুযোগ দেই এবং তাদেরকে ইতিবাচকভাবে বেড়ে উঠতে দেই।
পুরস্কার হিসেবে ১০ লাখ ডলার পেয়েছেন রিফাত, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০ কোটি টাকা। পুরস্কারের এই পুরো অর্থই তিনি শিক্ষাখাতে ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের অনেক ছোট শহরে পর্যাপ্ত স্কুল নেই, শিক্ষক নেই। অনেক শিশু শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাদের দিকে আমাদের নজর দিতে হবে।’
রিফাত আরিফ বলেছেন, পুরস্কারের এই অর্থ দিয়ে তিনি অনাথ শিশুদের জন্য একটি স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করবেন। সারা পৃথিবী থেকে শিক্ষকদের নিয়ে এসে শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে বলেও জানান তিনি।