দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনীতিতে রহস্যময় হাওয়া তৈরি হয়েছে। নির্বাচন এক মাসের কম সময় থাকলেও এখনো দেশের বড় অংশে ভোট উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়নি। বিএনপিসহ ভোটে যায়নি অন্তত ৬৪টি রাজনৈতিক দল। সরকারবিরোধী শিবিরের পর্দার আড়ালে অজানা শঙ্কার খবর উড়ছে। রাজনীতি ও কূটনীতিক পাড়ায় পা রাখা বিশ্বস্ত নির্ভরযোগ্য তিন শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, কূটনৈতিক প্রেসক্রিপশনে বিএনপিসহ অন্যান্য সরকারবিরোধী দল আগামী ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাবে। বিশেষ করে অবরোধ থেকে তারা পিছু হটবে না। এর মধ্যে ফাঁকে ফাঁকে নির্বাচনি ৩০০ আসনেও তারা কর্মসূচি দেবে। আগামী ১৭-১৮ ডিসেম্বর থেকে কর্মসূচিতে নতুনত্ব আসতে পারে। এরপর তারা জামায়াতসহ ইসলামী দল, বাম-ডান সবাইকে নিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাবে। তবে তার আগে আত্মগোপনে থাকা নেতারা প্রকাশ্যে আসতে পারেন। আজ মানবাধিকার দিবসকে কেন্দ্র করে সারা দেশে জামায়াত-বিএনপি প্রকাশ্যে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে ভাষ্য নেতাকর্মীদের।
রাজনীতিতে চোখ রাখা নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে— মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে বাণিজ্যিক খাতেও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা করছে সরকারবিরোধীরা। অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, গার্মেন্ট ও মানবাধিকার বিষয় নিয়ে দেশে বড় চাপ তৈরি হতে পারে। ভোটের আগে-পরে যুক্তরাষ্ট্র তার সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুর মেলাতে পারে অন্যান্য বন্ধু দেশ। বিএনপির এক সময়কার মন্ত্রী, দলটির এক নীতিনির্ধারক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমার সংবাদকে বলেন, ‘সময়টি আর বেশি দূর নয়, বাংলাদেশে মানুষ অতীতের মতো দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে। আগামী চার-পাঁচ মাস পরও মানুষ না খেয়ে বড় ঝুঁকিতে পড়তে পারে। অতীতেও রাজনৈতিক কারণে দুর্ভিক্ষ তৈরি হয়েছে। সেই শঙ্কা আবারও দেখা দিয়েছে। এমন বার্তাগুলো বিরোধী শিবির ও সরকারের ঘরে পৌঁছানো হয়েছে বলে ভাষ্য তার। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৪-১৮ সালের মতো এবার ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনি ট্রেন পার হতে পারবে না। অংশগ্রহণ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন না হলে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে রাজনীতিতে ঝড় বয়ে যাবে। যার প্রতিটি ছায়া দেশের সব নাগরিকের উপরও পড়তে পারে। যে কালো মেঘ দেখা যাচ্ছে তা মোকাবিলা করার জন্য এখনো দুটো পথ খোলা রয়েছে বলে মনে করছেন তারা। সরকার যদি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে সংসদ ভেঙে দিয়ে তিন মাস ভোট পিছিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার মধ্যে পুনঃতফসিল দেয় তাহলে আগাম ঝুঁকিগুলো মোকাবিলা করা যাবে। না হলে বিরোধীরা সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ে মাঠে নামতে পারে। অর্থনীতিতে যে ঝড় আসবে, তাতে দেশের ব্যবসায়ীরা পথে বসে যেতে পারেন। অর্থনীতিতে ক্ষতিকর দেশের তালিকায়ও বাংলাদেশ পড়ে যেতে পারে। এ সব কিছুর মধ্যে রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উপর যে সুনামি বয়ে যাবে তার হাওয়া দেশের সব সেক্টরে পড়তে পারে বলেও ধারণা তাদের। বিস্তারিত