পশ্চিম মালয়েশিয়ার একটা ছোট এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশনে অপেক্ষা করছি আমরা ৮ জন। হাতে নিজেদের পাসপোর্ট নেই, এখানে আসার পরপরই ইমিগ্রেশন অফিসার সেগুলো নিজের অফিসে নিয়ে গেছেন। সাবাহ প্রদেশের ইমিগ্রেশনের আচার-ব্যবহার অবশ্য এখন পর্যন্ত অত্যন্ত অমায়িক। মুহূর্তের জন্যও মনে হবে না ‘বেআইনিভাবে’ তাদের রাজ্যে ঢুকে পড়ার প্রচেষ্টারত কিছু বাঙালির সঙ্গে কথা বলছেন তাঁরা। পরের ফ্লাইটেই আমাদের কুয়ালালামপুরে ফেরত পাঠাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন অফিসাররা। তবে যতই আদরযত্ন পাই না কেন, বিদেশবিভুঁইয়ে পাসপোর্ট হাতে না থাকার ভয়টা শরীর শীতল করে দেওয়ার মতো।
ইমিগ্রেশনে আটকে গেছি দেখে মোটেও ভাববেন না পর্যটক হিসেবে আমরা বোকা, অথবা আমাদের মতলব খারাপ। সমগ্র ইন্টারনেটের প্রায় প্রতিটি কোনা ঘেঁটে দেখেছিলাম আমরা ৮ জন, এই প্রদেশে ঢোকার প্রক্রিয়া কী। এয়ারলাইনসের ওয়েবসাইট, মালয়েশিয়া সরকারের ওয়েবসাইট, অনলাইন ভ্রমণ বিষয়ক ভ্লগ, ট্রিপ অ্যাডভাইসর—কিছুই দেখা বাদ ছিল না। চূড়ান্ত নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফোন করেছিলাম বাংলাদেশে অবস্থিত মালয়েশিয়ার দূতাবাস পর্যন্ত। তাঁরাও জানিয়েছিলেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী যেকোনো দেশের নাগরিকই সাবাহ প্রদেশে ঢুকতে পারবেন। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন থেকে দেওয়া ভিসার সিলেও লেখা ছিল—পশ্চিম মালয়েশিয়া, সাবাহ, সারাওয়াকে এই সিল ব্যবহার করে প্রবেশ করা বৈধ। কিন্তু কে জানত, বাংলাদেশিদের জন্য এখানে একটা বাড়তি বাধা বসানো আছে! সাবাহ পৌঁছে ইমিগ্রেশন ঘরটার দেয়ালে সাঁটানো নোটিশ দেখে প্রথমবারের মতো জানতে পারি সেই বাধার কথা। নোটিশে বড় বড় অক্ষরে লেখা ‘বাংলাদেশ ও নাইজেরিয়ার নাগরিকদের জন্য’। নিচে বিশাল নথির তালিকা, যা ই–মেইলের মাধ্যমে পাঠালে সাবাহ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমতির চিঠি পাওয়া যাবে।বিস্তারিত