রংপুর জেলার মিঠাপুকুরের তাজনগরের কৃষক মোহিন চন্দ্র গতকাল রোববার স্থানীয় পাইকারের কাছে প্রতিটি লাউ বিক্রি করেন ১৩ টাকায়। বিপরীতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে একই আকারের লাউ প্রতিটি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হয়েছে কমপক্ষে ১০০ টাকা। দেখা গেছে, ভোক্তাকে প্রতিটি লাউ কিনতে হচ্ছে ৮৭ টাকা বেশি দামে। অর্থাৎ উৎপাদনস্থলের দামের চেয়ে ঢাকার বাজারে দামের ফারাক ছয় থেকে সাত গুণ।
সবজির দর বাড়ার পেছনে কৃষক, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা নানা যুক্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। কৃষক বলছে, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে উৎপাদন খরচ। সেই তুলনায় তারা ন্যায্য দর পাচ্ছে না। অথচ তাদের সস্তা সবজি শহরের বাজারে হয়ে ওঠে দামি। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের যুক্তি, চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কম, পরিবহন খরচ বেশি। তবে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী পথে পথে ও বাজারে পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের লোকদের চাঁদাবাজি।
অর্থনীতিবিদরাও বলছেন, ভোক্তার পকেট কেটে অতিরিক্ত এই টাকা যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী ও চাঁদাবাজদের পকেটে। এ দুই স্তরে অনিয়ম ও দৌরাত্ম্য কমাতে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা জরুরি। সে জন্য সরবরাহ ব্যবস্থায় তদারকি বাড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে তদারকি টিম গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে সরবরাহ ব্যবস্থা ডিজিটাল করাও এখন সময়ের দাবি। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের ভাষ্য, নির্বাহী ক্ষমতা না থাকায় অনিয়মের দায়ে কাউকে তাৎক্ষণিক আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না।
শীত মৌসুমে হরেক সবজি আসবে বাজারে, দামও থাকবে নাগালে– এমন প্রত্যাশা থাকে ক্রেতার। তবে এ বছর সেই আশার ফানুস চুপসে গেছে। ভরা মৌসুমেও সবজিতে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে শিম, টমেটো, বেগুন, মুলা, ফুলকপির মতো সবজির দাম নাগালে নেই। গত বছরের চেয়ে বেশির ভাগ সবজির দর বেড়েছে ছয় থেকে সাত গুণ।বিস্তারিত