বাংলাদেশে অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সেগুলোর দূষণ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। কোনো কোনো সংগঠন বলছে, অবৈধ ইটভাটা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার, আবার কেউ বলছে এ সংখ্যা ৭ থেকে ৮ হাজারের কম নয়। একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে পরিবেশের ছাড়পত্রবিহীন অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী সারা দেশের অবৈধ ইটভাটা চিহ্নিত করার পাশাপাশি অনুমোদনহীন ও বেআইনিভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তার এই উদ্যোগ বাস্তবায়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন পরিবেশবিদরা। জানা যায়, কোনো রাখঢাক ছাড়াই অবৈধ এসব ইটভাটা থেকে বিভিন্ন ধরনের চাঁদা তোলা হচ্ছে। সরকারি কার্যালয়গুলো এসব ইটভাটা থেকে যেমন বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ফান্ডের টাকা নিচ্ছে, আবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ইটভাটার মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলছেন। এ অবস্থায় অনেকের মনে শঙ্কা রয়েছে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শেষ পর্যন্ত অবৈধ ইটভাটা নিয়ে তার নেওয়া সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারবেন কি না। সারা দেশের ইটভাটাগুলোতে কয়লা ও গাছ পোড়ানোয় এর কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ মারাত্মক দূষিত হচ্ছে। এরপরও জবাবদিহিতার অভাবে সারা দেশে ইটভাটা গড়ে উঠছে। এসব অবৈধ ইটভাটা চিহ্নিত করে পরিবেশের ছাড়পত্র দেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের। কিন্তু এক্ষেত্রে যথাযথ নজরদারি না থাকায় এসব ইটভাটার সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। এদিকে অবৈধ ইটভাটার বিকল্প হিসেবে দেশে ব্লক ইটের চাহিদা বৃদ্ধি পেলেও ইটভাটার মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে ব্লক ইটের প্রসারে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইটকে আমরা ‘নেসেসারি এভিল’ বলি। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ছাড়া বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর আর কোথাও পোড়ানো ইট এখন আর নির্মাণকাজে ব্যবহার হচ্ছে না। অবৈধ ইটভাটা নিয়ে নতুন পরিবেশমন্ত্রীর উদ্যোগকে তিনি সাধুবাদ জানিয়ে আরও বলেন, ইটভাটার দূষণ রোধে ভাটার মালিকরা ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে যাতে আর ইট না পোড়ায় তার জন্য তাদের নোটিস দিতে হবে। আর এটি না মানলে মার্চ মাস থেকে এসব ভাটার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। একই সঙ্গে তিনি পোড়ানো ইটের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহারের পরামর্শ দেন।বিস্তারিত