রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে ডেমরা রোড ধরে কিছুদূর এগোলেই বাঁ পাশে নীল রঙের কাচঘেরা একটি ছয়তলা ভবন। এর প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় তিনটি ব্যাংকের শাখা অফিস। আর তিন থেকে ছয়তলা পর্যন্ত থাই পার্ক চায়নিজ রেস্টুরেন্ট, পার্টি সেন্টার ও কমিউনিটি সেন্টার। ভবনের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য রয়েছে উন্মুক্ত স্থান।
কাগজ-কলমে এই জমির মালিক ঢাকা জেলা প্রশাসন। জমির প্রকৃতি ‘পুকুর বা জলাশয়’। কিন্তু ভবনের মালিক তুহিনুর রহমান ওরফে নূর হাজির দাবি, কখনোই সেখানে পুকুর-জলাশয় ছিল না।
১৫-২০ বছর আগে ভিটে জমি হিসেবে কিনে তিনি কমপ্লেক্সটি তৈরি করেছেন। রাজউকের অনুমতিও নিয়েছেন।
তবে ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নথিতে জায়গাটি যাত্রাবাড়ী মৌজায় খাস খতিয়ানভুক্ত। জমির পরিমাণ ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আরএস দাগ নম্বর নেই। তবে সিটি জরিপে কে বা কারা ২৭৫২ নম্বর দাগ তৈরি করে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘ওই জমিতে রাজউক কখনোই ভবনের নকশার অনুমোদন দেয়নি। জায়গাটি ড্যাপে জলাশয় হিসেবে চিহ্নিত।’ প্রমাণ হিসেবে তিনি ওই জায়গার ১৯৯৫ থেকে ২০২৩ সালের স্যাটেলাইট ইমেজ দেখান, যেগুলোতে জলাশয়-পুকুরের চিত্র ফুটে ওঠে। স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যায়, পুকুরটি ধীরে ধীরে ভরাট হতে থাকে। এরপর সেখানে টিনশেড-ঝুপড়ি ঘর তৈরি হয়। বছর দশেক আগে বহুতল ভবনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা সমকালকে বলেন, ‘রাজউকের অনেক সরকারি জমিতে একসময় পুকুর-জলাশয় ছিল। দিন দিন সেগুলো বেদখল হয়েছে। কিছু লোক নকল কাগজপত্র তৈরি করে দখল করেছে। এগুলো সব উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে কিছু খাস জলাশয় চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলোর সবকটিতে পুকুর করা সম্ভব না হলেও খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান বা পার্ক তৈরি করা হবে।’ বিস্তারিত