গাজীপুরপ্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে শাহবাজপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তাঁর ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার জের ধরে ওই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম গিয়াস উদ্দিন। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার শাহবাজপুর ভূমি কার্যালয়ের আওতাধীন ঢালজোড়া ও আটাবহ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শাহবাজপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে গিয়াস উদ্দিন খাজনা-খারিজ দেওয়ার নামে নানাভাবে ঘুষ নিয়ে আসছেন। এ নিয়ে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আজ সোমবার সকালের দিকে গোপনে ধারণ করা ওই কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিওচিত্র ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সিগারেট ধরিয়ে লম্বা করে ধুয়া ছাড়তে ছাড়তে সামনে বসা এক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েকটি ৫০০ টাকার নোট হাতে নিচ্ছেন গিয়াস উদ্দিন। এ সময় গিয়াস ওই ব্যক্তিকে বলছেন, ‘একটা মিস কেস ৫ হাজারের নিচে নেওয়া যায় না।’ সামনে বসা ব্যক্তিকে বলছেন, ‘কম্পিউটারে যে ছেলেটা কাজ করে, তাঁকেও ৫০০ টাকা দিতে হয়, তাইলে আমার কাজের একটা দাম আছে না।’ এরপর ওই ব্যক্তিকে ভূমি কর্মকর্তা পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘একটা আইডি খুলবেন। এরপর থেকে আপনাকে আর এখানে আসতে হবে না, অনলাইনে খাজনা দিতে পারবেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খাসজমি ঘুষের বিনিময়ে ব্যক্তিমালিকের নামে নামজারি করে দেওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা হলে তাঁকে সাত মাসের জন্য ওএসডি করা হয়। পরে দেনদরবার করে আবার চাকরিতে ফেরেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে কালেয়াকৈর উপজেলার শাহাবাজপুর ভূমি কার্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন। কালিয়াকৈরে এসে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
অভিযোগের বিষয়ে গিয়াস উদ্দিনের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ধরেননি। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব ওএলএ) মোছাম্মৎ হাসিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি এবং তাঁকে কর্মস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’