‘এখানে এলেই মনটা ভারী হয়ে যায়। ২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে কেবল সরকার গঠন করি। ২৫ ফেব্রুয়ারি ঘটে এক অঘটন। এই বিদ্রোহে ৫৭জন অফিসারসহ ৭৪জন জীবন হারায়। নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। স্বজনদের সহমর্মিতা জানাচ্ছি। স্বজন হারার বেদনা কত কঠিন, সেটা বোধহয় আমার থেকে কেউ বেশি জানে না। আমরা এই ঘটনার বিচার করেছি।’
সোমবার (৪ মার্চ) পিলখানায় বীর উত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস-২০২৩ এর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন : ভুয়া জন্মসনদ দিয়ে আবেদন, এনআইডিতে ‘বৃষ্টি খাতুন’ থেকে অভিশ্রুতি হওয়ার চেষ্টা
সকালে সাড়ে ৯টায় পিলখানায় উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন তিনি। পরে বিজিবিতে বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিজিবির ৭২ সদস্যকে পদক পরিয়ে দেন এবং জাতির পিতার স্মৃতি বিজড়িত প্রেরণা ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন। এরপর বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ব্যবস্থা করছি। যত খাদ্য লাগে আমরা বাইরে থেকেও নিয়ে আসছি। পাশাপাশি দেশের প্রতিটি মানুষকে উৎপাদন করতে হবে। যাতে আমাদের কারও কাছে হাত পাততে না হয়। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। বিজিবি বিশ্বমানের আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠবে আমরা চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বিজিবির কুচকাওয়াজ দেখে আমি আনন্দিত। বিশেষ করে, নারী সদস্যদের ড্রিল দেখে আমি বেশি আনন্দিত। বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য যারা আজ পদক পেলেন আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। জাতির পিতা ‘ঈমানের সঙ্গে কাজ করো, সৎ পথে চলো’ বলে গিয়েছিলেন। তার এ নির্দেশনা আপনারা মেনে চলবেন, আশা করি।
তিনি বলেন, দেশমাতৃকা রক্ষায় সদা জাগ্রত বিজিবি। তারা দেশের অর্থনীতির জন্যও কাজ করে। বিজিবি রোহিঙ্গাদেরও নিরাপত্তা দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের আমরা মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছি। প্রতিবেশিদের সঙ্গে ঝগড়ায় যাইনি। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি, তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারবো।
সরকারপ্রধান বলেন, দক্ষ আধুনিক শক্তিশালী ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে বিজিবি আত্মপ্রকাশ করেছে। আমরা এর জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি ইউনিট সুন্দরভাবে সীমান্ত রক্ষা, সীমান্তে অপরাধ দমনে কাজ করতে পারছে। আমরা চাই, বিজিবি হবে অন্যতম স্মার্ট বাহিনী। এই প্রথম আমরা নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করেছি। ২০১৫ থেকে এই বাহিনীতে নারী সংযুক্ত হচ্ছে। তারা বেশ স্মার্ট, আজকে আপনারা দেখলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতার হত্যার পর যারাই ক্ষমতা এসেছে, সীমান্ত চুক্তি নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আমরা ক্ষমতায় এসে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করেছি। ছিটমহল বিনিময় অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে করেছি। এতে বিজিবিও কাজ করেছে।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নেন।