নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে সরকারের নীতি নির্ধারক মহলে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী যে অনুশাসনগুলো দিয়েছেন, তার মধ্যে রয়েছে-
প্রথমত, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাবে তাদের ব্যাপারে নির্মোহ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। কে কোন পদে ছিল, কে কার আত্মীয় বা কার কী পরিচয় ইত্যাদি দেখা হবে না। সরাসরি তার অপকর্মের ব্যাপারে অনুসন্ধান করা হবে এবং এই অনুসন্ধানের মাধ্যমে আবার তার ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি দমন কমিশনে কেউ প্রভাব বিস্তার করবে না এবং কোন রকমের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। কোন এমপি বা সরকারের কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি যেন কারও জন্য তদবির না করেন তা নিশ্চিত করা হবে৷
তৃতীয়ত, প্রশাসন এবং সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদে যারা থাকেন তারা কী ধরনের জীবনযাপন করছেন, তাদের আয়ের উৎস কী, তাদের সম্পদের ফিরিস্তি কী- ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এবং তা জানাতে হবে।
চতুর্থত, সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরি থাকাকালীন অবস্থায় বাৎসরিকভাবে তাদের সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে হবে। উল্লেখ্য যে, এই বিষয়টি নিয়ে দুই বছর আগেই সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবে কার্যকর হয়নি। এখন সরকারের পক্ষ থেকে এই নির্দেশনাটি নতুনভাবে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
পঞ্চমত, প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তার কার্যবিধি এবং কার্যকলাপ গভীর মনিটরিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। কারণ বেনজীর আহমেদ ঘটনার মাধ্যমে একটা বিষয় উন্মোচিত হয়েছে যে তার বেপরোয়া দুর্নীতি একদিনে সংগঠিত হয়নি। অথচ একজন সরকারি কর্মকর্তা কী করছেন না করছেন সে সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য একাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রয়েছে। আর এই সমস্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেনি বলে সরকারের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন। আর যার দায়দায়িত্ব এসে পড়ছে সরকারের উপর।
এ কারণেই যখন একজনকে শীর্ষ পদে রাখা হবে তখন জন্য তার সম্পর্কে নিরবিচ্ছিন্ন এবং নিবিড়ভাবে খোঁজখবর নিতে হবে। বিশেষ করে এরকম একটি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি কোন দুর্নীতি বা অনিয়ম করছেন কি না, সে সম্পর্কেও নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যাতে হঠাৎ করে ভবিষ্যতে তার ফুলে ফেঁপে ওঠার গল্প প্রচারিত না হয়। আর এছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে অর্থ পাচার, ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।