আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দুর্নীতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি, ডোনাল্ড লু। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ডোনাল্ড লুকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতিসংক্রান্ত ইস্যুগুলো সমাধানের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা করার সদিচ্ছা নিয়ে সন্তুষ্ট কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ২০ মে, আমরা ৭০৩১ (সি) ধারার অধীনে সাবেক জেনারেল আজিজ আহমেদের উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে “পাবলিক ডেজিগনেশন” (একধরনের নিষেধাজ্ঞা) ঘোষণা করি। দুর্নীতির এ অভিযোগগুলোর ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে বলে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীরা বিবৃতি দিয়েছেন, আমরা এ ব্যাপারটি স্বাগত জানাই।’
তখন তাকে আবারও প্রশ্ন করা হয় যে অন্যান্য হাইপ্রফাইল নাগরিকদের ওপরও দুর্নীতির সাথে সম্পর্কিত এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কি না। জবাবে লু বলেন, ‘আমাদের কাছে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকে, তখন আমরা সারা বিশ্বেই নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা বিধিনিষেধের আকারে প্রকাশ্যে পদক্ষেপ নিই। আমাদের আইনগুলি আমাদেরকে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ বা তাদের দুর্নীতির অর্থের গন্তব্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখতে সচেষ্ট। আমি আশা করি, আমরা বাংলাদেশের জনগণের সাথে মিলে সব ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করে যাব।’
এ ছাড়া সাক্ষাৎকারে নির্বাচন প্রসঙ্গও উঠে আসে। ডোনাল্ড লুকে জিজ্ঞাসা করা হয়, সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরে, গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন ঘিরে দু’দেশের সম্পর্কে একধরনের টানাপোড়েন তৈরির কথা বলা হয়েছিল এরপর আবার দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে পেছনের দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আশাও ব্যক্ত করা হয়। এটি কি বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত? জবাবে ডেনাল্ড লু বলেন, ‘আমরা বিস্তৃত পরিসরে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সাথে আমাদের অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে প্রস্তুত এবং আগ্রহী। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের সাথে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর হবে। নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তায় আমরা আমাদের অভিন্ন স্বার্থকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা ইতোমধ্যে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যে নিজেদের অভিন্ন অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে একসাথে কাজ করে যাবার ব্যাপারে আশাবাদী। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন আমাদের জন্য একটি অগ্রাধিকার। আমরা সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ কাজকে সমর্থন করে যাব এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখব।’
সাম্প্রতিক সফরে বিরোধী দলীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করেননি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সরাসরি জবাব দেননি।