নিজস্ব প্রতিবেদক
কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বাড়ি ফিরছে মানুষ। এ কারণে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। বিশেষ করে সড়কে মানুষের চাপ বাড়ায় যানজট ও যানবাহনের ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা-উত্তরবঙ্গ, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে যানজট ও পরিবহনের ধীরগতি রয়েছে। এতে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একই সঙ্গে বাস ও টিকিটের সংকট দেখিয়ে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। দু-একটি ট্রেন বিলম্বে ছাড়লেও অধিকাংশ ট্রেনই সময়মতো ছেড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল সকাল থেকে ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের সড়কে কয়েকটি স্থানে যানজট রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে বের হতে গাবতলী-আমিনবাজার, নবীনগর থেকে চন্দ্রা হয়ে কালিয়াকৈর পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট রয়েছে। এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত চাপ থাকায় থেমে থেমে চলছে যানবাহন। একই সঙ্গে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় আসতে গোড়াই হাইওয়ে থানা থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত যানজট রয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের গাজীপুর অংশে যানজট রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে বের হতে কাঁচপুর, সোনারগাঁ, মেঘনা, দাউদকান্দি, গৌরীপুর, চান্দিনা, মিয়াবাজারসহ কয়েকটি স্থানে যানজট দেখা যায়। তবে কুমিল্লা থেকে ঢাকামুখী যাতায়াতে মাধাইয়া, গৌরীপুর, দাউদকান্দি টোল প্লাজা, গজারিয়া, সোনারগাঁ ও কাঁচপুরে তীব্র যানজট রয়েছে। একই সঙ্গে উত্তরের ঈদযাত্রায় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে গাইবান্ধার ৩২ কিলোমিটার অংশের ৪ কিলোমিটার ভোগাচ্ছে যাত্রীদের। চলমান ছয় লেন সড়ক নির্মাণকাজের এ অংশে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। ঈদযাত্রায় এসব সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে কয়েকগুণ।
টিকিট সংকট, বাড়তি ভাড়া : বাড়ি ছুটছে মানুষ। যাচ্ছে টার্মিনালে। কিন্তু টার্মিনালে এলেও বাস ও টিকিটের সংকট তুলে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। মোহাম্মদপুর থেকে গাবতলী বাস টার্মিনালে এসেছেন আয়মান ও আদিব। ঈদ উদযাপন করতে যাবেন খুলনার পাইকগাছায়। কিন্তু এসে দেখেন খুলনার কোনো বাসেই সিট খালি নেই। ফলে তাদের যশোরগামী বাসের টিকিট খুঁজতে হয়। সেই টিকিট নিতে গিয়ে পড়েন বিপাকে। টিকিটের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি চাইছে কাউন্টারগুলো।
রেলস্টেশনে ভিড় : তৃতীয় দিনের মতো গতকাল রেলস্টেশনে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গত দুই দিনের তুলনায় স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় বেশি। তবে নেই ট্রেনের বিলম্ব যাত্রা, নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন। গত কয়েকদিনের তুলনায় আবহাওয়া ঠান্ডা থাকায় সব মিলিয়ে ট্রেনের ঈদযাত্রা স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে। তবে শুধু তিতাস কমিউটার ট্রেনসহ কয়েকটি ট্রেন কিছুটা বিলম্বে স্টেশন ছেড়েছে। কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।
লঞ্চযাত্রা : যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সদরঘাট টার্মিনালের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ, জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে যাত্রীদের সেবা দিতে চালু করা হয়েছে বিশেষ লঞ্চ। ঈদ কেন্দ্র করে গত কয়েকদিনে ঘাটে যাত্রীর চাপ কিছুটা বাড়ায় বাড়ানো হয়েছে দৈনিক চলাচলকারী লঞ্চের সংখ্যা। লঞ্চমালিকরা বলছেন, যাত্রীর চাপ বাড়লে লঞ্চের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।