স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা শাখার দুই যুগ্ম সচিবের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে ওই মন্ত্রণালয়েরই উপদেষ্টার কাছে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছেন এক ভুক্তভোগী ঠিকাদার ব্যবসায়ী।
গত শনিববার (১২ অক্টোবর) ভুক্তভোগী রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাবর রোডস্থ ব্যবসায়ী আবুল কালাম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন সচিব এবং স্বাস্থ্য সচিব বরাবর পৃথক পৃথক ৩টি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী আবুল কালাম উল্লেখ করেন, চিকিৎসা শিক্ষা শাখার যুগ্ম সচিব মল্লিকা খাতুন ও আব্দুল কাদের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়নকারী। তারা স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে গড়ে তুলেছেন এক অদৃশ্য সিন্ডিকেট। তিনি বলেন, এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা হিসেবে থেকে দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর ধরে এ বিভাগে বিভিন্ন ধরনের বদলি বাণিজ্য, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট, মেডিকেল কলেজ সিন্ডিকেট, মেডিকেল, ডেন্টাল ও নার্সিং কলেজের আসন বৃদ্ধি, নতুন প্রতিষ্ঠান অনুমোদন ও নবায়ন, চিকিৎসকদের বদলিসহ নানা ধরনের টেন্ডার বাণিজ্যের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করেছেন। আর এসব কর্মকাণ্ড তার সহযোগী হিসেবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে কর্মরত আর এক যুগ্ম সচিব আব্দুল কাদের পরোক্ষভাবে কাজ করেছেন।
এমনকি এ সিন্ডিকেটটি বিভিন্ন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের চাপ প্রয়োগ করে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের টেন্ডার পাইয়ে দিয়ে ওইসব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কমিশন খাওয়ারও অনেক অভিযোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ওএসডি হওয়া সাবেক স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব আজিজুর রহমানের সহযোগিতায় যুগ্ম সচিব মল্লিকা খাতুন চার মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১০ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার বাণিজ্য তার স্বামী ব্যবসায়ীকে দিয়ে করছেন। যদিও মল্লিকা তার স্বামী এ ব্যবসায়ের সঙ্গে সংযুক্ত নয় উল্লেখ করে বলেন, আমার স্বামী একজন পোশাক উৎপাদনকারী। তার কোনো ঠিকাদার ব্যবসা নেই।
স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের দুই যুগ্ম সচিবের দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ
হয়রানিমূলক মামলা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আবুল কালাম তার লিখিত বক্তব্যে জানান, তারিক হাসান অ্যাসোসিয়েট ও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের গভর্নিং বডির টেন্ডার কমিটির সদস্য আর্কিটেকচার মনজুরুলের সহযোগিতায় বিভিন্ন কলেজের তাদের পছন্দের অধ্যক্ষ বসিয়ে তাদের মাধ্যম দিয়ে কোটি কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্য করেছেন।
এ ব্যাপারে মূল অভিযুক্ত যুগ্ম সচিব মল্লিকা খাতুনের কাছে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এ অভিযোগকে অস্বীকার করে নিজেকে একজন সৎ সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে দাবি করেন। এ ছাড়াও এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন। অপর অভিযুক্ত এডমিন শাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্র অন্যায় এবং দুর্নীতির মাধ্যমে সবাইকে ঠকিয়ে আসছে। আমি অভিযোগ দিয়েছি। একটি তদন্ত কমিটি দ্বারা নিরপেক্ষ কমিটি করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছি।