আগের ম্যাচে মালদ্বীপের বক্সে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছিলেন রাকিব হোসেন-শেখ মোরসালিনরা। ফলে আক্রমণে আধিপত্য থাকলেও কাঙি্ক্ষত লক্ষ্যের দেখা মেলেনি। উল্টো রক্ষণের ভুলে গোল হজম করে ম্যাচ হারতে হয়েছিল। শনিবারও শুরুতেই নড়বড়ে ছিলেন ডিফেন্ডাররা।
অভিজ্ঞ তপু বর্মণ তো মারাত্মক ভুল করে বসেন। তাতে পিছিয়েও পড়তে হয় স্বাগতিকদের। তবে গোলের খোঁজে থাকা বাংলাদেশ প্রথমার্ধেই পেয়ে যায় সেই গোল। একাদশে ফেরা মজিবুর রহমান জনির শট জাল জড়ালে ম্যাচে থাকে বাংলাদেশ।
আর বদলি নেমে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে পাপন সিংয়ের গোল বাংলাদেশকে এনে দেয় ২-১ ব্যবধানের জয়।
এ বছরের শেষ ম্যাচ ছিল এটিই। ২০২৪ সালে খেলা আট ম্যাচের শেষটি অন্তত জয়ে রাঙাতে পারল হাভিয়ের কাবরেরার দল। সব মিলিয়ে জিতেছে মাত্র দুটিতে।
বছরের শেষ ম্যাচ বলেও জয়ে রাঙানোর আশায় কিংস অ্যারেনায় নেমেছিলেন ফুটবলাররা। এদিনও রাকিব ও ফয়সাল আহমেদ দুই উইং ধরে আক্রমণে যান বারবার। তাতে সুযোগ আসছিল কিন্তু শুধু গোলটাই আসছিল না। মালদ্বীপও রয়েসয়ে খেলার চেষ্টা করেছে। ২৪ মিনিটে তারা যে গোলটি পেয়েছে সেটা তপু বর্মণের ভুলে।
ভুল পাসে এই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডা বল তুলে দেন ইব্রাহিম মাহাদির পায়ে। মাহাদির থ্রু পাস ধরে সাদউদ্দিন ও তপুর ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন আলী ফাসির। আগের ম্যাচেও জালের দেখা পেয়েছিলেন এই ফরোয়ার্ড।
পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরতে জোর চেষ্টা চালায়। ৪০ মিনিটে রাকিবের ক্রসে ফয়সাল আহমেদের শট ফিস্ট করে ফেরান গোলরক্ষক। ফিরতি বলে ফাঁকায় থাকা শেখ মোরসালিনের শট উড়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। তিন মিনিট পর স্বস্তির সেই গোল পেয়ে যায় বাংলাদেশ। রাকিবের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ দক্ষতা দেখিয়ে দুরের পোস্টে জাল খুঁজে নেন জনি। এই গোলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় স্বাগতিকদের। দ্বিতীয়ার্ধে শাহরিয়া ইমন-চন্দন রায় বদলি নেমে খেলায় গতি বাড়ান। ৭৬ মিনিটে মোরসালিনের বদলি পিয়াস আহমেদ নোভা নামেন অভিষেক ম্যাচ খেলতে। নামার কয়েক মিনিটের ব্যবধানেই মালদ্বীপের রক্ষণভাগে চাপে ফেলানোর চেষ্টা করেন এই স্ট্রাইকার। গোলও পেতে পারতেন তিনি কিন্তু রাকিবের শট হুসাইন শরীফ কোনো মতে ফেরালে সেই বল ফাঁকায় পেয়েও জালে পাঠাতে পারেননি পিয়াস।
এর পরও হাল ছাড়েনি কাবরেরার শিষ্যরা। আক্রমণ অব্যাহত রেখে যোগ করা তৃতীয় মিনিটে পেয়ে যায় জয়সূচক গোল। শাহরিয়ার ইমনের ক্রসে বক্সে দারুণ ফিনিশিংয়ে জালে পাঠান পাপন। তাতে গোলের গেরো খুলে জয়ের স্বস্তিও ফেরে বাংলাদেশ শিবিরে।
ম্যাচের পর মুখে হাসি নিয়েই সংবাদ সম্মেলনে আসেন কাবরেরা। জানালেন পরিকল্পনা কাজে দিয়েছে, ‘সুযোগ নষ্ট ম্যাচেরই অংশ। ছেলেরা আজ কাজে লাগাতে পারায় ম্যাচ জিততে পেরেছি। আমাদের জন্য ভালো ম্যাচ ছিল।’
কিংস অ্যারেনায় বসে ম্যাচ উপভোগ করেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে ছিলেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল। কিংস অ্যারেনার সুযোগ-সুবিধা মুগ্ধ করেছে তামিমকে। তিনি বলেন, ‘এখানকার পরিবেশ দারুণ, শুধু এই মাঠ নয়, পুরো কমপ্লেক্সই। বসুন্ধরাকে ধন্যবাদ। ফুটবল এখনো বাংলাদেশের জনপ্রিয় খেলা।’