ডিজিটাল ডেস্ক
নিরাপত্তা চুক্তির প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান বদলানো এবং অব্যাহত আঞ্চলিক উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে জাপান তাদের দক্ষিণাঞ্চলীয় কিউশু দ্বীপে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে।
প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উত্তর কোরিয়া এবং চীনের উপকূলীয় অঞ্চলে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে কিয়োডো নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুসারে, এগুলো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওকিনাওয়া দ্বীপ শৃঙ্খলের প্রতিরক্ষা জোরদার করবে এবং আক্রমণের ক্ষেত্রে জাপানের ‘পাল্টা আক্রমণ ক্ষমতা’ বাড়াবে।
চীনকে উত্তেজিত করা এড়াতে তাইওয়ানের ১১০ কিলোমিটারের মধ্যে বিস্তৃত ওকিনাওয়া দ্বীপপুঞ্জে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সম্ভাবনা কম। দ্বীপপুঞ্জগুলোতে ইতিমধ্যেই কমপাল্লার বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
ফুকুই প্রিফেকচারাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ইয়োইচি শিমাদা বলেন, চীন এবং উত্তর কোরিয়ার হুমকি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে জাপানের পক্ষে আরও কার্যকর অস্ত্র ব্যবস্থার মাধ্যমে এর মোকাবিলা করাটা স্বাভাবিক। আমি মনে করি জাপানের দ্রুত আরও শক্তিশালী নিরাপত্তা গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের মতো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
গত ৬ মার্চ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, জাপান-মার্কিন নিরাপত্তা চুক্তিটি পারস্পরিকভাবে অ-প্রতিক্রিয়াশীল। তিনি বলেন, জাপানের সঙ্গে আমাদের একটি দুর্দান্ত সম্পর্ক রয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের একটি আকর্ষণীয় চুক্তি রয়েছে, যার অধীনে আমাদের তাদের রক্ষা করতে হবে। কিন্তু তাদের আমাদের রক্ষা করতে হবে না। চুক্তিটি এভাবেই লেখা আছে…। আমার জিজ্ঞাসা, কে এই চুক্তিগুলো করে?’
এই চুক্তিটি প্রথম সই হয়েছিল ১৯৫১ সালে, যখন জাপান মার্কিন বাহিনীর দখলে ছিল। জাপানের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা তার সংবিধানের শান্তিবাদী অনুচ্ছেদ ৯-এ সীমাবদ্ধ।
টোকিওর টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের রবার্ট ডুজারিকের মতে, কানাডা এবং ডেনমার্কসহ মিত্র ও সহযোগী ন্যাটো সদস্যদের সম্পর্কে ট্রাম্পের ঘোষণা জাপানের কিছু লোককে দীর্ঘস্থায়ী চুক্তিগুলোকে সম্মান করার বিষয়ে তার প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। চীন যদি জাপানে আক্রমণ করে, তবুও ট্রাম্পের অধীনে আমেরিকা কিছু করবে এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। এটি একটি বড় সমস্যা।
হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার পর ৮০ বছর ধরে জাপানের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দেশটি মনে করে, তারা আর মার্কিন সামরিক সহায়তার ওপর নির্ভর করতে পারে না।