ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নিজের মেয়েকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। গতকাল রবিবার (৬ এপ্রিল) রাতে তাকে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
জানা যায়, ভাঙ্গা উপজেলার নাসিরাবাদ ইউনিয়নের বড়পাল্লা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগে রবিবার রাতে ভাঙ্গা থানা পুলিশ বাবা মোস্তফা মোল্লা (৫০) এবং তার মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মোস্তফা ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।
পরে ওই রাতেই ভুক্তভোগী নারীর মামা বাবুল কবিরাজ বাদি হয়ে তার বাবার বিরুদ্ধে ভাঙ্গা থানায় ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।
ভাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রজিত মল্লিক বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। মোস্তফার নামে মামলা হয়েছে।
আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) তাকে ফরিদপুর জেল হাজতে পাঠানো হবে। অন্যদিকে ভুক্তভোগী নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। সে বর্তমানে ভাঙ্গা থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।’
পারিবার ও এলাকাবাসী জানান, অভিযুক্ত মোস্তফা মোল্লা দুটি বিয়ে করেছেন।
দ্বিতীয় সংসারে অন্ধ স্ত্রী, ভুক্তভোগী মেয়ে ও ৩টি ছেলে আছে। শ্বশুরবাড়িতে ঘর তৈরি করে সেখানেই তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে বসবাস করছিলেন। স্ত্রী ভিক্ষা করে সংসার চালান। এর আগে তিনি সদরপুরে বিয়ে করেন। সেখানে বেশিরভাগ সময় থাকেন।
ভুক্তভোগী নারীকে তিনি দীর্ঘ দুই বছর যাবৎ ধর্ষণ করে আসছেন। বিষয়টি ওই নারী ৪-৫ মাস আগে তার মাকে জানায়। পরে মা তার স্বামীকে এ অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন। কিন্তু তিনি তার স্ত্রীর কথা শোনেননি। পরে মেয়েটির মা তার ভাইদের বিষয়টি জানান।
গতকাল রবিবার রাতে মেয়েটির বাবা আবার বাড়িতে এলে মেয়েটির মামা এবং এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে ভাঙ্গা থানা পুলিশ গিয়ে মেয়েটির বাবা ও মেয়েটিকে ভাঙ্গা থানায় নিয়ে আসে।
নাসিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং বড়পাল্লা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারী একজন প্রতিবন্ধী। বাবা তেমন কোনো কাজ করেন না। ওই নারীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাবাকে আটক করে ভাঙ্গা থানা পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ওই নারীর মামা বাবুল কবিরাজ বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন বলে জানতে পেরেছি।’
ভাঙ্গা থানার ওসি মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ‘ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মেয়ের মামা বাদি হয়ে অভিযুক্ত বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন।’