মুজিব-বন্দনায় অপচয় ৪ হাজার কোটি টাকা মুজিববর্ষ পালন ও ভাস্কর্য নির্মাণ ।। ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ ।। ৭ সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন হাসিনা-রেহানাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে

মুজিব-বন্দনায় অপচয় ৪ হাজার কোটি টাকা মুজিববর্ষ পালন ও ভাস্কর্য নির্মাণ ।। ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ ।। ৭ সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন হাসিনা-রেহানাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে মুজিববর্ষ পালন এবং শেখ মুজিবের ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল-ভাস্কর্য নির্মাণ করে অর্থ অপচয় ও রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সাত সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।

দুদক সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে সাত সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের অপর সদস্যরা হলেন- সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এসএম রাশেদুল হাসান, একেএম মর্তুজা আলী সাগর, মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ও উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মুজিববর্ষ পালন উপলক্ষে সারাদেশে ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ করেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। এতে খরচ হয় প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। বিপুল এই ব্যয় এখন অপ্রয়োজনীয় ও অপচয় হিসেবেই মূল্যায়িত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০-২১ সালকে (১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ৩১ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত) মুজিববর্ষ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়।

করোনাভাইরাসের কারণে কর্মসূচিগুলো নির্ধারিত সময়ে যথাযথভাবে করতে না পারায় মুজিববর্ষের মেয়াদ প্রায় ৯ মাস বাড়িয়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। এ উপলক্ষে আগে থেকেই আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ শুরু করে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে এক হাজার ২২০টি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য বানানো হয়। তবে সরকারি ৭০০ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, জেলা-উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ মিলিয়ে ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার। এতে খরচ হয় প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। সব জেলা পরিষদে ম্যুরাল নির্মাণে খরচ হয় আট লাখ থেকে তিন কোটি টাকা পর্যন্ত। সড়কের শুরুতে, শেষে, চৌরাস্তায়, নদীর তীরে, পুকুরপারে, প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পথে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় এগুলো বসানো হয়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যুরালের নকশা ও ডিজাইন তৈরিতে খরচ হয় ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া স্থাপনা এবং অন্যান্য বিষয় মিলিয়ে এর মোট ব্যয় হয় এক কোটি ২৫ লাখ টাকা। রাজধানীতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) অর্থায়নে তৈরি করা ম্যুরালটির উচ্চতা ১০ ফুট ও প্রস্থ ৮ ফুট। নির্মাণে সময় লাগে তিন মাস। ব্যয় হয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ বেতার পাঁচ কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকায় মুর‌্যাল নির্মাণ করে। এই ভাস্কর্য ও ম্যুরাল বা প্রতিকৃতি নির্মাণে পৃথক কোনো প্রকল্প নেওয়া হয়নি। সরকারি অর্থে স্থানীয় প্রশাসন ভাস্কর্য ও ম্যুরাল নির্মাণ করেছে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ